সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনির্দিষ্টকালের বনধ ডেকেও পাহাড়কে বাগে আনতে পারেননি বিমল গুরুং। বনধ অস্ত্র ভোঁতা হওয়ার দিনে মোর্চা শিবিরের কাছে আরও এক ধাক্কা। গোর্খা লিগ নেতা বিমল তামাং হত্যা মামলায় নগর দায়রা আদালতে এই মামলার শুনানি হতে চলেছে। যে মামলায় বিমল গুরুং সহ ২৩ জন মোর্চা নেতা অভিযুক্ত। মামলার চার্জ গঠনের পর বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হলে গুরুংদের কলকাতায় থাকতে হবে।
গোর্খাল্যান্ড নামের গাজর ঝুলিয়ে পাহাড়ে দাপট ধরে রাখার মরিয়া চেষ্টায় বিমল গুরুং। পৃথক রাজ্য চেয়ে গুরুংদের জঙ্গি আন্দোলনে পাহাড় ছেড়েছিলেন সুবাস ঘিসিং। মোর্চা সভাপতির চরমপন্থা পছন্দ না হওয়ায় অনেকেই গুরুংয়ের রোষানলে পড়েছিলেন। অভিযোগ গুরুংয়ের মদতেই ২০১০ এর মে মাসে দার্জিলিংয়ে প্রকাশ্যে খুন হয়েছিলেন মদন তামাং। সাত বছর আগের ঘটনা নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা-মোকদ্দমা চলছে। কখনও গুরুংদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়না জারি হয়েছে, কখনও আগাম জামিন নিয়ে গ্রেপ্তারি এড়িয়েছেন বিমল গুরুং। পাহাড়ে লাগাতার বনধ ডেকে ফের যখন গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে উচ্চগ্রামে নিয়ে যেতে চাইছেন, তখনই মদন তামাং হত্যা মামলার ভূত গুরুংয়ের ওপর চেপে বসল।
মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতের এই মামলার শুনানি শুরু হবে। বিমল গুরুং, তাঁর স্ত্রী আশা গুরুং, রোশন গিরি, বিনয় তামাংদের মতো মোর্চার প্রথম সারির নেতাদের নাম এই মামলায় জড়িয়ে। এর বিচার শুরু হলে অভিযুক্ত এই নেতাদের কলকাতায় থাকতে হবে। পাহাড়ে অনির্দিষ্ট কালের বনধ ডাকলেও প্রথম দিনেই স্পষ্ট গুরুংদের উদ্দেশ্য অনেকটা ব্যর্থ হয়েছে। সরকারি অফিসে স্বাভাবিকভাবে কাজ হয়েছে। বিচার চলাকালীন গুরুং-সহ মোর্চা নেতৃত্বকে কলকাতায় আসতে হলে আন্দোলনে কতটা ঝাঁজ থাকবে তা নিয়ে এখন থেকেই নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে। মদন তামাং হত্যা মামলাকে তৃণমূল যে ইস্যু করতে চাইছে তা কয়েক দিন আগেই বোঝা গিয়েছিল। পাহাড়ে তৃণমূলের নেতা বিন্নি শর্মা জানিয়েছিলেন, মদন তামাং হত্যার ঘটনায় মামলার শুনানি শেষ হলেও, অজ্ঞাত কারণে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না। পাহাড়ের তৃণমূল নেতৃত্ব ওই মামলায় দ্রুত ট্রায়াল শুরু হওয়ার দাবি জানায়। পাশাপাশি বিচারপর্ব চলাকালীন অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়ার কথাও বলে তারা। ২০১৫ সালের মে মাসে এই মামলায় সিবিআই চার্জশিট দিয়েছিল। তারপর এই মামলায় টানাপোড়েন চলছে। গুরুংদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। পরে আগাম জামিনও পেয়ে যান গুরুংরা। নগর দায়রা আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হলে গুরুংদের কী হাল হবে বা পাহাড়ের সমীকরণ কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.