অরূপ বসাক, মালবাজার: জমি বিবাদের জেরে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল জলপাইগুড়ি জেলার ওদলাবাড়ির ঘিস নদী সংলগ্ন এলাকায়। তবে খবর পেয়ে মাল থানার পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। উত্তেজনা প্রশমনে পুরো এলাকায় পুলিশি টহল শুরু হলেও চাপা উত্তেজনা এখনও রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকমাস ধরেই ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি মন্দিরকে ঘিরে দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছিল। সমস্যার সমাধান করতে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে এলাকার বিশিষ্টদের উপস্থিতিতে একাধিকবার বৈঠক করা হলেও তা যে এখনও মেটেনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার ঘটনায় তা আবার প্রমাণিত হল।
অভিযোগ,বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাবেলায় মন্দিরে আরতির সময় ঘিস কলোনির গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সইদার রহমান, হজরত আলি ও জহর আলির নেতৃত্বে একদল যুবক ওই মন্দির কমিটির সঞ্চালক দিলীপ চৌধুরি ও অন্যদের সঙ্গে মারপিটে জড়িয়ে পড়েন। দিলীপ চৌধুরির বক্তব্য, মন্দিরের দখল করা জমির সীমানায় থাকা বেড়া ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের কয়েকজনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। আক্রমণকারীদের মন্দিরের দখল করা জমি জবরদখল করে বিক্রি করার মতলব রয়েছে বলে অভিযোগ দিলীপ চৌধুরি ও বাবলু চাকলাদার প্রমুখ মন্দির কমিটির লোকেদের।
[শিলিগুড়ির কাছে চলন্ত ট্রেনে আগুন, আতঙ্কে ঝাঁপ দিয়ে মৃত ২]
অন্যদিকে, মন্দিরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সইদার রহমান বলেন, “ওখানে মন্দির নির্মাণের জন্য জায়গা আমরাই দিয়েছি। তারপরও দেখছি, মাঝে মাঝেই ধর্মীয় পতাকা লাগিয়ে নতুন করে সংলগ্ন আরও জমি দখল করার চেষ্টা করছেন মন্দির কমিটির লোকজন। গতকালও নতুন করে জমি দখলের সীমানা বেড়া দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। আমরা বাধা দিতে গেলে প্রথমে আমাকেই মারধর করেন মন্দির কমিটির সদস্যরা। তারপর মারামারি শুরু হয়।” দুপক্ষের তরফেই মাল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
[এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের সমর্থনে অনশনে কবি মন্দাক্রান্তা সেন]
এদিকে দুপক্ষের মারামারি শুরু হওয়ার খবর পেয়ে দ্রুত মাল থানা থেকে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। ঘটনাস্থলে আসেন মালের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তীও। খবর পৌঁছে যায় রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরেও। এরপর থেকেই সতর্কতা অবলম্বনে কঠোর নজরদারি শুরু করে পুলিশ। নতুন করে আর কোনও গোলমাল সৃষ্টি না হলেও এলাকায় চাপা উত্তেজনা লক্ষ্য করা গিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় শাসকদলের তরফে এই ঘটনার ইন্ধনকারীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি দুপক্ষের লোকজনকে নিয়ে আগামী সোমবার শান্তি বৈঠকের আয়োজন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ওদলাবাড়ি অঞ্চল কমিটির সভাপতি জয়দীপ সেন ও গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুশীল সরকার। প্রশাসনের তরফে আপাতত দুপক্ষকেই শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.