পলাশ পাত্র, তেহট্ট: মাছ খেতে চাইতেন। চাইতেন ডিম খেতে। বউমার আচার-আচরণ নিয়েই প্রশ্ন তুলতেন। এ নিয়ে নিত্যদিন ঝামেলা লেগেই থাকতো। বাবাকে যথেচ্ছ গালিগালাজ করত গুণধর পুত্র। তাতেও আঁশ মেটেনি। প্রকাশ্যে বাবাকে পিছমোড়া করে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করল ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে তেহট্ট থানার হাউলিয়া পার্ক এলাকায়।
অত্যাচারিত বাবার নাম ভীম শর্মা। কাঠের কাজ করতেন ভীমবাবু। কয়েক বছর আগে স্ত্রীর মৃত্যু হয়। দুই ছেলে। বড় ছেলে প্রহ্লাদ দেবগ্রামে ব্যবসা করেন। ছোট ছেলে পরিতোষ ও বউমা কাজলী শর্মা তাঁর সঙ্গে একই বাড়িতে থাকে। বৃদ্ধ হয়েছেন। কাজ কমেছে ভীমবাবুর। এখন আর তেমন রোজগার নেই। অভিযোগ, বেশ কয়েকদিন ধরেই ছোট ছেলে ও বউমা তাঁর উপর মানসিক-শারীরিক অত্যাচার চালাচ্ছে। হাত খরচা বলতে কিছু দেয় না। দেয় না খেতে। ওষুধ কেনার পয়সা পর্যন্ত ভীমবাবুকে জোটাতে হয়। উপরন্তু তাঁর মোবাইলটিও কেড়ে নিয়েছে দু’জনে। এই পরিস্থিতিতে নিজেই কোনওমতে আয় করে পেট চালাচ্ছিলেন ভীমবাবু।
[সিটুর ডাকা পরিবহণ ধর্মঘটের আংশিক প্রভাব রাজ্যে, ভোগান্তি যাত্রীদের]
এদিকে ছোট ছেলে চলে যায় কাজে। আর বউমা দীর্ঘক্ষণ কারও সঙ্গে কথা বলতে থাকে। বাড়িতে অচেনা লোক প্রবেশ করে। তা সহ্য করতে না পেরেই প্রতিবাদ করেছিলেন বৃদ্ধ। এই অপরাধেই ছেলে-বউমা মিলে তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেদম প্রহার করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমেই পুলিশের কাছে খবর যায়। ঘটনাস্থলে এসে বৃদ্ধকে উদ্ধার করেন পুলিশকর্মীরা। কাঁদতে কাঁদতে ভীমবাবু বলেন, ‘ছেলেকে কষ্ট করে মানুষ করেছি। ওরা মাছ, ডিম খেলে দেয় না। বলাতে মারধর করল।’ ভীমবাবুর বড় ছেলে প্রহ্লাদ শর্মা বলেন,’আমরা এখন দেবগ্রামে থাকি। বাড়িতে বাবা আর ভাই-বউমা থাকে। কোন ভাবে বাবাকে তাড়াতে পারলে সম্পত্তি ওদের পুরোটা। তাই বাবাকে ওরা দু’জন এদিন গাছে বেঁধে মারধর করেছে।’ অভিযুক্ত ছেলে ও বউমার শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনায় অবশ্য কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ভীমবাবুর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ছেলে বোঝায় পুলিশ। বৃদ্ধের প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করা হয়।
[নদীর চর থেকে মিলল নাতনির মৃতদেহ, খুনের অভিযোগ ঠাকুমার বিরুদ্ধে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.