প্রতীকী ছবি
নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: আইনের নজরদারি এড়িয়ে কিশোরী কন্যার বিয়ে ঠিক করেছিলেন বাবা, মা। কিন্তু নির্দিষ্ট দিন পাত্র বিয়ে করতে যাওয়ার আগেই কিশোরীর বাড়ি পৌঁছলেন পঞ্চায়েত সদস্য ও বনগাঁ মহকুমা আইনি পরিষেবা সমিতির সদস্যরা। আর খবর পেয়ে মাঝপথ থেকেই পাত্র ফিরে গেল নিজের বাড়িতে৷ মুচলেকা দিলেন নাবালিকার বাবা। বন্ধ হল বিয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার স্থানীয় ভুলোট এলাকার বাসিন্দা বছর পনেরোর, দশম শ্রেণিতে পড়া কিশোরীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল পাশের পাটকেলপোতা গ্রামের রফিকুল মণ্ডলের। বিয়ের আগেই খবর পৌঁছে যায় আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কাছে। তাঁরাই আবার শনিবার রাতে সেই খবর পাঠিয়ে দেন সুন্দরপুর পঞ্চায়েতের এক সদস্যকে। শনিবার রাতে বিয়ের প্রস্তুতিও চূড়ান্ত হয়েছিল৷ পাত্রপক্ষ যাওয়ার অপেক্ষায় ছিল কন্যা পক্ষ। কিন্তু পাত্রের আগেই বিয়েবাড়িতে পৌঁছে যান আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ। কিশোরীর পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ করবার প্রক্রিয়া শুরু হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে বোঝাতে থাকেন নাবালিকার পরিবারের সদস্যদের৷ সে রাতের মত বিয়ে বন্ধ হলেও, রবিবার সকালেই প্যারা লিগ্যাল ভলান্টিয়াররা পৌছে যান ওই নাবালিকার বাড়ি। তার বাবাকে লিখিত মুচলেকা দিতে হয়েছে। তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে যে মেয়ের আঠারো বছর না হলে আর বিয়ে দেওয়ার কথা তাঁরা ভাববেন না।
[কৃষকদের আয় বাড়াতে শিলিগুড়িতে স্ট্রবেরি উৎসবের আয়োজন]
আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সম্পাদক অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী বলেন, ‘মেয়েটিকে লেখাপড়ার জন্য সব রকমের সাহায্য করা হবে। আঠারো বছরের আগে বিয়ে যাতে না হয়, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। ওদের অর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাই ভাল পাত্র পেয়ে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই নাবালিকার বাবা। তবে মেয়েটি এখন লেখাপড়া করতে চায়, স্কুলে যেতে চায় বলে জানিয়েছে।’ গ্রামবাংলায় দারিদ্র্যের জন্য পড়াশোনায় ইতি টেনে, কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার এই প্রবণতা রুখতে রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্প আছে। তার মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সফল প্রকল্প – কন্যাশ্রী। আগে এই সরকারি সাহায্য শুধু দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মেয়েরাই পেত। কিন্তু এবার থেকে পড়শোনার জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন সবাই। রাজ্য সরকারের এই সাহায্য অনেকাংশেই আটকেছে নাবালিকা বিয়ের মতো সামাজিক প্রবণতা। তবু এটা যে একেবারে নির্মূল হয়নি, তারই প্রমাণ বনগাঁর এই ঘটনা। তবে এক্ষেত্রে সমাজকর্মীদের নজরদারিতে ঘটনা ঘটার আগেই তা আটকে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.