Advertisement
Advertisement
আত্মঘাতী ছাত্রী

শিক্ষিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক, বেরিয়ে আসতে চাওয়ায় ব্ল্যাকমেলের জেরে আত্মঘাতী ছাত্রী

অন্তরঙ্গ ছবি ফাঁস করার হুমকি দিয়ে টাকা চাইত ওই শিক্ষিকা।

Teen girl killes herself over physical relation with Teacher
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:July 7, 2020 10:15 pm
  • Updated:July 7, 2020 10:15 pm  

দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: শিক্ষিকার সঙ্গে ছাত্রীর দীর্ঘদিনের শারীরিক সম্পর্ক। আর এই শারীরিক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল ছাত্রী। পরিণামে ছাত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মূহূর্তের ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে টাকা দাবি করে শিক্ষিকা। তাতেই মানসিক বিপর্যয় ঘটে যায় ছাত্রীর। আর তার জেরেই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন ১৮ বছরের শুভশ্রী বর্মন। মর্মান্তিক এই ঘটনায় কোন্নগর অরবিন্দ রোডের চড়কতলা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এই ঘটনায় আত্মঘাতী ছাত্রীর বাবা ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে উত্তরপাড়া থানায় জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ব্ল্যাকমেল ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন।

শুভশ্রী বর্মন কোন্নগর চড়কতলার বাসিন্দা। সে বঙ্গবাসী কলেজের বিএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী। গত ৩০ জুন শুভশ্রী কীটনাশক খেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই ৬ জুলাই সোমবার তাঁর মৃত্যু হয়। মেয়ের এই মর্মান্তিক পরিণতির জন্য সুখেন বর্মন স্থানীয় একটি স্কুলের এক প্যারাটিচারকে দায়ী করেছেন। তনয়া ঘোষ নামে ওই শিক্ষিকার কাছে গত চার বছর ধরে প্রাইভেট টিউশন নিত মেয়ে। সুখেনবাবুর অভিযোগ এই চার বছর ধরে ওই শিক্ষিকা মেয়ের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে। অনেক রাত পর্যন্ত ওই শিক্ষিকা মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে চ্যাটও করত। মেয়ে সম্পর্ক রাখতে না চাওয়ায় শিক্ষিকা তার আপত্তিকর ছবি ফেসবুক, ইউটিউবে ছেড়ে দেবে বলে তাকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে। প্রায়শই শিক্ষিকা মেয়ের কাছে টাকা দাবি করত। সুখেনবাবু জানান তিনি কারখানায় সামান্য কাজ করেন। তার পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না। সুখেনবাবুর অভিযোগ, ওই শিক্ষিকারই ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি হরিপাল থেকে তাঁর মেয়েকে বিষ এনে দেয়। সেই বিষ খেয়েই আত্মঘাতী হয় তাঁর মেয়ে শুভশ্রী।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বাথরুমে ঢুকে নাবালিকার ‘শ্লীলতাহানি’, মারধরের পর অভিযুক্তের চুল কেটে নিল স্থানীয়রা]

এদিকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকার বাড়িতে গেলে তাঁর বাবা অভিযোগ অস্বীকার করে এই বিষয়ে কোনো কথাই বলতে চান নি। প্রতিবেশী পাপিয়া বোস জানান, শুভশ্রী অত্যন্ত ভাল মেয়ে ছিল। ওর ব্যবহারও অত্যন্ত ভাল। টিচারের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে কী কথা হল যে শিক্ষিকা তা ডিলিট করে দিলেন। আর তাতেই সন্দেহ জেগেছে অন্যান্য প্রতিবেশীদের। তবে এলাকাবাসীর দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে যদি সত্যি ওই শিক্ষিকা জড়িত থাকেন তবে পুলিশ তদন্ত করে তা খুঁজে বের করুক। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা ও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ দায়ের করেছেন আত্মঘাতী ছাত্রীর বাবা। তারা সমস্ত ঘটনার সত্যতাসত্য খতিয়ে দেখছেন। পাশাপাশি, যে ব্যক্তি শুভশ্রীকে বিষ এনে দিয়েছিল সে কারোর প্ররোচনায় ওই ছাত্রীকে বিষ এনে দিয়েছিল কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এরই সঙ্গে প্যারাটিচারদের মানসিক গঠন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

শ্রীরামপুর আদালতের এক আইনজীবী জানান, বছর দুই আগে উত্তরপাড়ার একটি নামী স্কুলের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নবম শ্রেণির ছাত্রের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ও চ্যাটে অশালীন কথাবার্তা বলার অভিযোগ উঠেছিল। ওই ছাত্রের বাবা বিষয়টি জানতে পারার পর আদালতের দ্বারস্থ হন এবং ছেলেকে বিপথ থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যারা শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত তারা কেন এই ধরনের অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই বলেছেন, এর জন্য ছেলেমেয়েদের প্রপার কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজন, নয়তো সমাজের এই অবক্ষয় রোধ করা যাবে না।

[আরও পড়ুন: ৩ জামাইবাবুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, চারদিনের সন্তানকে নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ নাবালিকা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement