ধীমান রায়, কাটোয়া: মোবাইল নিয়ে ভাইবোনের ঝগড়া। তার জেরে অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল দিদি। ভাই প্রতিবেশীদের সময়মতো ডেকে না আনলে দিদির মৃত্যু ছিল অবধারিত। দিদিকে বাঁচিয়ে বাবা-মায়ের বকুনির ভয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হল ভাই। রবিবার সন্ধ্যায় কাটোয়ার শ্রীখণ্ড গ্রামের পাশে একটি বটগাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় কৈলাস ঘোষ (১২) নামে কিশোরের দেহ। মর্মান্তিক ঘটনায় কার্যত শোকে মূহ্যমান মৃতের পরিবার থেকে প্রতিবেশীরা। সোমবার দেহটি ময়নাতদন্ত করা হয়। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্তে নেমেছে।
[ আরও পড়ুন: ‘মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ’, সাংসদ হওয়ার পর প্রথমবার বসিরহাটে গিয়ে আপ্লুত নুসরত ]
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থানার শ্রীখণ্ড গ্রামের ভূতনাথতলার বাসিন্দা পেশায় কৃষক শ্যামল ঘোষের এক মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়ে প্রিয়াঙ্কা এবছর মাধ্যমিক পাশ করেছে। গ্রামের স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। তার ভাই কৈলাস ওই স্কুলেরই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার শ্রীখণ্ড বারোয়ারিতলায় হরিনাম সংকীর্তনের আসর চলছিল। শ্যামলবাবু ও তাঁর স্ত্রী তনুশ্রীদেবী সেখানে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিল প্রিয়াঙ্কা ও কৈলাস। তারা একসঙ্গে বাবার মোবাইল ফোনটি নিয়ে গেম খেলছিল। তখনই দুই ভাইবোনের মধ্যে ফোন নিয়ে ঝগড়া হয়।
শ্যামলবাবুর পাশেই থাকেন তাঁর ভাই পার্থবাবু। তিনি বলেন, “বিকেলে দাদা-বউদি বাড়িতে ছিলেন না। তখন আমার ভাইপো কৈলাস হাঁপাতে হাঁপাতে ডাকতে আসে। জানায়, দিদি গলায় দড়ি দিয়েছে। আমি ও আমার স্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে যাই। দেখি দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। পাড়ার লোকজনকে ডেকে দরজা ভেঙে ঢুকি। তখন দেখি প্রিয়াঙ্কা গামছার ফাঁস দিয়ে ঝুলছে। তবে তার পা বিছানার সঙ্গে ঠেকে থাকায় বিপদ ঘটেনি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রিয়াঙ্কাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় পরিবার ও প্রতিবেশীরা। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রিয়াঙ্কাকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর থেকে দেখতে পাওয়া যায়নি কৈলাসকে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির অদূরে মাঠে একটি বটগাছে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। দিদিকে বাঁচিয়ে সে নিজে কেন এমন ঘটনা ঘটাল, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েই৷ ছেলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া পরিবারে৷
ছবি: জয়ন্ত দাস।
[ আরও পড়ুন: ‘পুলিশের জিভ ছিঁড়ে নেব’, হুমকি দিয়ে বিতর্কে বীরভূমের বিজেপি নেতা ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.