স্টাফ রিপোর্টার: মছলন্দপুরে যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শিশু পাচারের আড়কাঠির কাজ করত, তার পাশের মাঠে মাটি খুঁড়ে মিলল দুটি শিশুর কঙ্কাল৷ আরও তিনটি শিশুকে পুঁতে রাখা হয়েছে, এই খবর পেয়ে দুপুর পর্যন্ত চলছে খোঁড়াখুঁড়ি৷ ওই সংগঠনের নেত্রী পলি ব্যাপারি ও তার সহযোগী সত্যজিত্ সিনহাকে আগেই ধরেছে পুলিশ৷ তাদের জেরা করেই জানা যায়, যে শিশুগুলি পাচারের আগেই মারা যেত তাদের পুঁতে দেওয়া হত তথ্যপ্রমাণ লোপাটে৷
এ যেন মাকড়সার জাল৷ কোথায় শুরু আর কোথায় শেষ বোঝা মুশকিল৷ শুরু হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায়৷ দেখা গেল তার জাল ছড়ানো কলকাতা তো বটেই, দক্ষিণ শহরতলির ঠাকুরপুকুরেও৷ যেখানে গতকাল রাতে সিআইডি অভিযানের পর স্পষ্ট, সেখানে হোমের আড়ালে চলত শিশুপাচারের কারবার৷ অসহনীয় পরিবেশে শিশুদের রাখা হত সেখানে৷ গ্রেফতার হয়েছে সেই হোমের মালকিন রীনা যে আবার বাদুড়িয়ার ঘটনার জেরে আগেই ধৃত বেহালার সত্যেন রায় রোডের এক নার্সিংহোমের কর্ত্রী পুতুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ে৷ পুতুলের নার্সিংহোমের সঙ্গে একই সূত্রে বাঁধা ছিল বাদুড়িয়ার নার্সিংহোমের লোকজন৷ এবং সেই জালে জুড়ে ছিল ঠাকুরপুকুরের কুলগাছিয়ার পূর্বাশা হোমটি যা কি না প্রতিবন্ধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবেই জানত মানুষ৷
সেই ভুল ভাঙল গত মধ্যরাতে৷ যখন সিআইডি অফিসাররা সেখান থেকে উদ্ধার করলেন দশটি শিশুকন্যা৷ রীনার পাশাপাশি সেখানকার দুই কর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে৷ তিনজনকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে আর কোথায় কোথায় ছড়ানো এর জাল৷ সেই জাল কেটে কত শিশুর হদিশ মিলবে তাও ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের৷ সব মিলিয়ে গ্রেফতার ১৮ জন৷ পুতুলকে জেরা করেই গোয়েন্দারা জানতে পারেন ঠাকুরপুকুরের হোমের কথা৷ বুঝতে পারেন বাদুড়িয়ার নার্সিংহোমটি শুধু নয়, রাজ্যজুড়ে এর জাল ছড়ানো৷ সুতোর টানে টাকা কামানোর যে পাপের খেলা চলছে তার লাটাইয়ের খোঁজ পাওয়া খুব সহজ নয়৷ কিন্তু তা এই তদন্তে জরুরি৷ তাই সামান্য সময় নষ্ট না করে প্রতিটি সম্ভাবনা মাথায় রেখে নেমে পড়ে সিআইডি টিম৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.