ছবি প্রতীকী
ধীমান রায়, কাটোয়া: লকডাউনে প্রায় তিনমাস স্কুল বন্ধ। করোনা
আবহে পঠনপাঠনও ব্যাহত হচ্ছিল। কারণ, সংক্রমণ এড়াতে ব্যাচে পড়ানোও বন্ধ রেখেছিলেন গৃহশিক্ষকরা। তবে এমনটা চলতে থাকায় পড়ুয়াদের সিলেবাস শেষ করা নিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই গৃহশিক্ষকদের একাংশ ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালু করে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেন। অনেকেই একপ্রকার বিনা বেতনে এভাবে পড়াচ্ছেন। তবে এবার এই অনলাইনে ক্লাসের জন্য দু’মাসের বকেয়া বেতন চেয়ে একপ্রকার হুঁশিয়ারিই দিলেন কাটোয়ার এক শিক্ষক। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ঘোষণা করে দিলেন, বকেয়া না মেটানো পর্যন্ত আর কোনও নোট দেওয়া হবে না।
পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া শহরের কাশীরামদাস ইনস্টিটিউশনের বাংলার শিক্ষক বিশ্বজিৎ নস্কর। সরকারি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক হওয়ার সুবাদে মোটা টাকা বেতন পান। আবার গৃহশিক্ষকতা থেকেও বাড়তি আয় হয়। তো এহেন শিক্ষকের ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে এমন হুঁশিয়ারি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল তো বটেই, এলাকাতেও এ নিয়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।
জানা গিয়েছে, লকডাউন ঘোষণা হওয়ার কয়েকদিন পর থেকে তিনি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালু করে ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে ক্লাস শুরু করেন। ওই হোয়াটস আ্যপ গ্রুপেই তিনি দু’দিন আগে একটি ‘বিজ্ঞপ্তি’ জারি করে লেখেন, ”গ্রুপের প্রত্যেককে বলছি, এপ্রিল-মে মাসের ফি জুনের প্রথম সপ্তাহে পৌঁছে দিতে হবে। তারপরেই নতুন নোট পাঠানো ও অ্যাপের মাধ্যমে পড়ানো শুরু করব।” ফি দিতে যাওয়ার দিনক্ষণ সেই গ্রুপেই জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্বজিৎবাবু। সেইসঙ্গে যেসব ছাত্রছাত্রীর ওই দু’মাসের বকেয়া রয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তাঁদের নামও উল্লেখ করে দিয়েছেন ওই শিক্ষক।
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এসব পোস্ট করার পর বিশ্বজিৎবাবু সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের মনে বেশ বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অভিভাবকরাও এসব জেনে গিয়েছেন। এমনকী বিশ্বজিৎবাবুর ওই পোস্টের স্ক্রিনশট ফেসবুকেও নিমেষে ভাইরাল হয়। তারপরেই সমালোচনায় মুখর হন স্থানীয়রা। বিষয়টি মোটেই ভালভাবে মেনে নিতে পারেননি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশও। কাশীরামদাস ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক কমলকান্তি দাস বলেন, ”সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা টাকার বিনিময়ে প্রাইভেট টিউশন করতে পারেন না। বিষয়টি আমার কানে এসেছে। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্বজিৎ নস্করের সাফাই, ”অভিভাবকারই আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, আমার বাড়িতে টিউশন ফি তাঁরা পৌঁছে দিতে চান। তাঁদের অনুরোধেই জানিয়েছিলাম কীভাবে ফি দেবেন। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে।”
ছবি: জয়ন্ত দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.