Advertisement
Advertisement

Breaking News

job lost

পুরুষ হওয়াই কাল! ১৮ বছর শিক্ষকতার পর চাকরি খোয়াতে হল পুরুলিয়ার প্রৌঢ়কে

শিক্ষা দপ্তরের দ্বারস্থ হয়েও সুরাহা পাচ্ছেন না ওই শিক্ষক।

Teacher lost his job after 18 years of service
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:April 8, 2025 10:09 pm
  • Updated:April 8, 2025 10:09 pm  

স্টাফ রিপোর্টার, পুরুলিয়া: পুরুষ হওয়াই কাল হল! মেয়েদের স্কুলে ১৮ বছর ধরে পার্ট-টাইম টিচার হিসাবে ছাত্রী পড়ানোর পর হটাৎ করে চাকরি গেল ওই শিক্ষকের। পুরুলিয়ার হুড়া থানার লক্ষণপুর যোগদা সৎসঙ্গ কন্যা বিদ্যালয় (উচ্চ মাধ্যমিক) স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শুভ্রা মাহান্তি ওই শিক্ষককে জানান, তাঁকে রেজিগনেশন দিতে হবে। সেই সঙ্গে আর স্কুলে না আসার কথা বলেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, গার্লস স্কুলে কোন ‘মেল টিচার’ রাখা যাবে না। আর তারপরেই ওই স্কুলের দর্শন বিভাগের শিক্ষক পাড়া ব্লকের চৌতালার বাসিন্দা সমীরকুমার দেওঘরিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের দ্বারস্থ হন। ওই মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক মহুয়া বসাক বলেন, “এই ধরনের পার্ট টাইম টিচারের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে স্কুলের এক্তিয়ারভুক্ত। ফলে আমাদের কিছু করার নেই।”

Advertisement

শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থায়ী শিক্ষকের ক্ষেত্রে সরকারি বিধি রয়েছে মেয়েদের স্কুলে পুরুষ শিক্ষক নিয়োগ হবে না। তবে অশিক্ষক কর্মচারী পুরুষ থাকতে পারেন। তবে ওই শিক্ষক সমীরকুমার দেওঘরিয়া জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানিয়েছেন, ২০০৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ে তাকে নিয়ে কোনও অসুবিধা হয়নি। গত ৩ এপ্রিল স্কুল গেলে প্রধান শিক্ষিকা তাকে স্কুলে না আসার কথা বলেন। সেই সঙ্গে রেজিগনেশন দেওয়ার কথা জানান। প্রধান শিক্ষিকা জানিয়ে দেন, একটা নতুন নিয়ম হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে গার্লস স্কুলে কোন ‘মেল টিচার’ রাখা যাবে না। ওই শিক্ষকের কথায়, “আমি এই বিষয়টি বিদ্যালয়ের স্টাফ কাউন্সিলকে জানিয়েছি। কিন্তু ওনারা তেমন কোন নিয়ম রয়েছে বলে জানেন না। বিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মী চাই আমি স্কুলে থাকি। কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা কোনওমতেই কারো কথা শুনছেন না। “

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শকের কাছে ওই শিক্ষকের করুণ আর্জি, “আমার বয়স ৫০ বছর। আমার স্ত্রী শারীরিক দিক থেকে অসুস্থ। আমার মেয়ে কলেজে ইংরাজি অনার্স পড়ছে। ছেলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। উচ্চমাধ্যমিকে সায়েন্স নিয়ে পড়তে চায়। আমার কাজটা চলে গেলে আমার সংসারটা সম্পূর্ণ অন্ধকারে ভেসে যাবে। এই বয়সে আমাকে যদি স্কুল থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আমি ও আমার পরিবার আর্থিক দিক থেকে খুব অসুবিধায় পড়ব।” একুশ শতকের নারীরা যেখানে পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে পুরুষ হওয়ার কারণে চাকরি খোওয়ানো রীতিমতো নজির! ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শুভ্রা মাহান্তি জানান, “আমাদের স্কুল একটি সোসাইটির পরিচালনায় চলে। ওই সোসাইটি আগেই জানিয়েছিল মেয়েদের স্কুলে কোনও পুরুষ শিক্ষককে রাখা যাবে না। সেই মোতাবেক আমি ওই শিক্ষককে জানিয়ে দিয়েছি।”

জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ধরনের পার্টটাইম টিচারের ক্ষেত্রে নিয়োগের সময় সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী যে কোনও সময় তাকে চাকরি থেকে সরে যেতে হতে পারে। তবে ওই শিক্ষক জানান, ২০০৭ সালে নিয়োগের সময় ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে এই বিষয়ে কিছু বলেনি। ১৮ বছর ধরে ছাত্রী পড়িয়ে এবার চাকরিহারা হওয়ায় অথৈ জলে তিনি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement