দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: খুদে পড়ুয়ারা ঠিক মতো পড়ছে কিনা সেদিকে খেয়াল নেই। মিড-ডে মিলের খাবারের মান নিয়েও নেই কোনও তদারকি। স্কুলে আসার বদলে এলআইসির কাজ নিয়ে ব্যস্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। শিক্ষক দিবসে এমনটাই অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে। অভিযোগের তির গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত কুমার মণ্ডলের দিকে।
অভিযোগ, শিক্ষকের স্কুলের প্রতি অমনোযোগিতা নিয়ে প্রশাসন-সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করা হলেও সুরাহা মেলেনি। সমস্যা সমাধানের জন্য পড়ুয়াদের অভিভাবকরা স্থানীয় বিডিওর কাছে গিয়েছেন। কিন্তু স্কুলের পরিস্থিতি যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে অভিভাবকরা জানান, সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন স্কুলে জয়ন্তবাবুর দেখা মেলে না। তিনি স্কুলে আসার বদলে গ্রামে গ্রামে ঘুরে পলিসি বিক্রি করে বেড়ান। কখনও সখনও স্কুলে এলে অভিভাকদেরও পলিসি কিনতে অনুরোধ করেন। এর জেরে তিনি হয়তো আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু সার্বিকভাবে বিপাকে পড়ছে স্কুল ও পড়ুয়ারা। তাদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে স্কুলের দুরাবস্থা বলে বোঝানো যাবে না। অন্যদিকে মিড-ডে মিলের হালও তথৈবচ। মিড-ডে মিল বলে যে খাবার বাচ্চাদের দেওয়া হয়, তার মান অত্যন্ত খারাপ। বাচ্চারা খেতে চায় না। তারপর যেদিন পড়ুয়ার সংখ্যা কম থাকে সেদিনই ডিম দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কোনও ধরনের সমস্যা হলে তাঁকে ফোন করলে জানা যায়, এলআইসি অফিসে রয়েছেন জয়ন্ত কুমার মণ্ডল। মাস গেলে বেতন নিলেও স্কুলের দিকে তাঁর কোনও খেয়াল নেই বলেই অভিযোগ অভিভাবকদের।
উল্লেখ্য, শিক্ষকতার সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। যেখানে স্পষ্ট ভাষায় বলা আছে, শিক্ষক তাঁর মূল কর্তব্যের বাইরে গিয়ে কোনওরকম বেসরকারি বা সরকারি কাজে যুক্ত থাকতে পারবেন না। এমনকী, কোনও এজেন্ট বা ঠিকাদারি কাজও করতে পারবেন না। যদিও এই নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই কাজ করে চলেছেন ওই শিক্ষক। এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ওটা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জয়ন্ত কুমার মণ্ডল। ভিত্তিহীন অভিযোগ উড়িয়ে দাবি, স্কুলের সময়ে এলআইসি-র কাজ করেন না। পরিচালন সমিতির তৎপরতায় শুরু হয়েছে তদন্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.