অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: বছর পাঁচেকের ছাত্রের শরীরের বেশীরভাগ অংশেই পোড়া দাগ৷ দু’হাতের পাতা, আঙুল, হাঁটু, পায়ের পাতা কিছুই বাকি নেই৷ যেন আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছে সে৷ কিন্তু এমনভাবে নৃশংস অত্যাচার কে করল? নিগৃহীত শিশুর দাবি শিক্ষিকাই এমনভাবে গরম খুন্তির ছেঁকা দিয়েছে তাকে৷ আরও জানায়, পড়া না পারার ‘অপরাধে’ এমন অত্যাচারের শিকার হয়েছে সে৷
বেলুড়ের একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে ওই ছাত্র। প্রতিদিনই স্কুল থেকে ফিরে গৃহশিক্ষিকার কাছে পড়তে যেত সে। অন্যান্যদিনের মতো বৃহস্পতিবারও স্কুল থেকে ফিরে বেলুড়ের গিরিশ ঘোষ রোডে গৃহশিক্ষিকার কাছে পড়তে যায় আপার কেজির পড়ুয়া ওই ছাত্র। নিগৃহীত ওই শিশু জানিয়েছে, তাকে পড়া জিজ্ঞেস করেন গৃহশিক্ষিকা। কিন্তু সে সেই পড়া বলতে পারেনি। অভিযোগ, তারপরই তার শরীরের বিভিন্ন অংশে গরম খুন্তির ছেঁকা দেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা। পুড়ে যায় শরীরের বিভিন্ন জায়গা। কনুই, দুই হাতের পাতা, হাতের তালু, হাতের আঙুল, থাই, হাঁটু ও পায়ের পাতা- ওই জায়গাগুলির চামড়া পুড়ে গিয়ে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে।
এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে নিগৃহীত ছাত্রের পরিবার। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে। অবিলম্বে অভিযুক্ত শিক্ষিকার কড়া শাস্তির দাবি করেছে ওই ছাত্রের বাড়ির লোক৷
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক একদিকে যেমন শ্রদ্ধার, তেমনই স্নেহেরও। শৈশবে বহু ক্ষেত্রেই একজন ছাত্র বা ছাত্রীর প্রিয় বন্ধু হয়ে ওঠেন তার শিক্ষক বা শিক্ষিকা। শিশুমনের বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা। দেশ গড়ার কারিগর বলা হয় তাঁদের। কিন্তু সেই শিক্ষিকাই অমানবিকতার নজির তৈরি করলেন হাওড়ার বেলুড়ে। এর আগেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষকদের হাতে ছাত্রনিগ্রহের ঘটনা সামনে এসেছে। ছাত্রকে মেরে কান ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষকের মারে কালশিটে পড়ে গেছে ছাত্রের পিঠে। বর্তমান যুগে জীবনযাত্রার জন্য অবসাদের জেরেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে এ ধরনের প্রতিহিংসাপরায়ণ মানসিকতা গড়ে উঠছে বলেই দাবি মনোবিদদের৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.