চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদকের মেয়ের বিয়ে। বন্ধ পঠন-পাঠন৷ ছুটি ঘোষণা স্কুলে কর্তৃপক্ষের৷ শুক্রবার এই ঘটনায় বিতর্কে জড়াল আসানসোল উষাগ্রাম বয়েজ হাইস্কুল৷ অভিভাবকদের দাবি, আগের দিনই নোটিস দিয়ে স্কুলে ছুটি দেওয়া হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পুরোপুরি ছুটি নয় সেকেন্ড পিরিয়ডের পর ছুটি দেওয়া হয়েছে স্কুলে৷ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলাশিক্ষা দপ্তর। এই ঘটনা একেবারেই বেআইনি ও অনৈতিক বলে মন্তব্য জেলা স্কুল পরিদর্শকের৷
শুক্রবার স্কুলের পরিচালন কমিটির সম্পাদক মোজেস প্রসাদের মেয়ের বিয়ে ছিল৷ এই উপলক্ষে গোটা স্কুলে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। স্কুল ছেড়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মচারী সবাই আসানসোলের সিটি বাস স্ট্যান্ডের উলটোদিকে চার্চে বিয়ের অনুষ্ঠানে চলে যান৷ বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হতেই বিয়ে বাড়ির সামনে নিরাপত্তার বহর বাড়িয়ে দেওয়া হয়৷ স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, গোটা স্কুল ফাঁকা। এরপর চার্চে যাওয়া হলে সেখানে দেখা যায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বসেছে বিয়ের আসরে৷
সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ছবি তুলতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। বেলা একটা নাগাদ অনুষ্ঠানে আসা কোনও শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষকের ছবিও করতে দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক মোজেস প্রসাদের দাবি, স্কুলের শিক্ষকরা বেতন তুলতে গিয়েছিল বলে বন্ধ রয়েছে স্কুলের পঠন পাঠন। তাঁর মেয়ের বিয়ের জন্য স্কুল ছুটি ছিল না। কিন্তু বেলা তিনটে নাগাদ দেখা যায়, স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা চার্চের সামনে থেকে গাড়ি করে মুখ লুকিয়ে চম্পট দিচ্ছেন। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুকান্ত চৌধুরীকে ফোনে যোগাযোগ করে হলে তিনি জানান, এব্যাপারে তিনি কিছু বলবেন না। তাঁর অসুবিধা আছে। যা বলার পরে বলবেন৷
[চোখ রাঙাচ্ছে নিম্নচাপ, ভারী বৃষ্টির ভ্রুকুটি দক্ষিণবঙ্গে]
জেলা সহকারী স্কুল পরিদর্শক অজয় পাল জানান, অভিযোগটি পেয়েই তিনি যোগাযোগ করছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে। তিনি জানান, স্কুল ছুটি ছিল না। সেকেন্ড পিরিয়ড পর্যন্ত পড়াশোনা হয়েছে। তারপর স্কুল ছুটি হওয়ার দুটি কারণ। এক, স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদকের মেয়ের বিয়ের আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন সবাই। দুই, ব্যাংকে বেতন তুলতে শিক্ষক-শিক্ষকরা গিয়েছিলেন। স্কুল পরিদর্শক বলেন, দুটো কারণই অনৈতিক। এটা তাঁরা করতে পারেন না। সোমবারের মধ্যে এর জবাব চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক বিভাগের বহু অভিভাবক বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মিথ্যা কথা বলছেন। স্কুল ছুটির নোটিস আগের দিনই দেওয়া হয়েছিল। তবে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.