দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ফের তুচ্ছ কারণে ছাত্রকে মারধরে কাঠগড়ায় শিক্ষক। মারের চোটে জ্ঞান হারাল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। কলকাতার অদূরে সোনারপুরের ঘাসিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ঘটনায় রীতিমতে স্তম্ভিত অভিভাবকরা।
গত শুক্রবার স্কুলের বেঞ্চে বসা নিয়ে কয়েকজন ছাত্রের মধ্যে ঝামেলা বাধে। সহপাঠীর নামে নালিশ করে এক পড়ুয়া। এরপরই প্রসেনজিৎ রায় নামে ওই অভিযুক্ত শিক্ষক আসেন এবং লাঠি দিয়ে নির্বিচারে মারতে থাকেন অভিযুক্ত পড়ুয়াকে। মারের চোটে ঘটনাস্থলেই অজ্ঞান হয়ে যায় চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্র। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা স্কুল চত্বরে। চিকিৎসার জন্য ছাত্রটিকে নিয়ে যেতে হয় সোনারপুর মহকুমা হাসপাতালে। আপাতত সুস্থ চতুর্থ শ্রেণির ওই পড়ুয়া। গতকাল রাতে শিক্ষক প্রসেনজিৎ রায়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে আক্রান্তের পরিবার। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য পুরো ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে।
কদিন আগেই খাস শহর কলকাতায় স্পিচ থেরাপি সেন্টারে শিক্ষিকার মারে মাথা ফেটেছিল এক আড়াই বছরের শিশুর। বাচ্চাটির বাবা অভিযোগ করেছেন, তাঁর ছেলের মাথায় আঘাত করা হয়েছে। আঘাত এতটাই জোরাল যে মাথায় ফুটো হয়ে রক্ত বেরতে থাকে। শিশুর আঘাতের সে ছবি প্রকাশ্যেও এসেছে। এরপরই তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় ওই শিক্ষিকাকে। এক্ষেত্রে অবশ্য অভিযুক্ত শিক্ষক প্রসেনজিৎ রায়কে এখনও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
২০১২ সালে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের মারধরের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। আইন করে বলা হয়েছিল, কোনওভাবেই পড়ুয়াদের গায়ে হাত তুলতে পারবেন না শিক্ষকরা। প্রয়োজনে শিক্ষকের আচরণ হবে বন্ধুর মত, শারীরিকভাবে ছাত্রছাত্রীরা যাতে কোনও আঘাত না পায় সেজন্য যত্নশীল হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হওয়া অশিক্ষক কর্মচারীদেরও। কিন্তু প্রশাসনের সে উদ্যোগকে শিকেয় তুলে মাঝেমাঝেই ছাত্রছাত্রীদের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। আকছার ঘটছে ঘাসিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনার মত ঘটনা, যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শিক্ষাবিদদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.