Advertisement
Advertisement

শতায়ু পরিবার! তিরানব্বইয়েও ‘বিন্দাস’ মাগুর

সেঞ্চুরি না করে জীবন-ময়দান থেকে ব্যাট-প্যাড গুটিয়ে রাখার প্রশ্নই ওঠে না৷৷ 

Target century, he is now at 93
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 24, 2016 10:37 am
  • Updated:November 24, 2016 12:38 pm  

সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: বাবা বেঁচেছিলেন পাক্কা একশো বছর৷ ঠাকুরদা যখন ইহলোকের পাঠ চুকিয়ে অনন্তলোকে যাত্রা করলেন, তখন তিনি একশো দশটি বসন্ত পার করেছেন৷ তাঁরই নাতি হওয়ার সুবাদে তিরানব্বই বছর বয়সেও তাই ‘বিন্দাস’ শিলিগুড়ির চয়নপাড়ার মাগুর রায়৷ প্রসঙ্গ উঠলেই ঠাট্টার ছলে বলেন, চিন্তা কীসের৷ শতায়ু পরিবার৷ সেঞ্চুরি না করে জীবন-ময়দান থেকে ব্যাট-প্যাড গুটিয়ে রাখার প্রশ্নই ওঠে না৷

একডাকে এলাকার সবাই চেনেন মাগুরবাবুকে৷ শহরের অদূরে ইস্টার্ন বাইপাসের ধার ঘেঁসে তাঁর চায়ের দোকান৷ ভোর পাঁচটাতেই মাগুর রায়ের চায়ের দোকানের ঝাঁপ খুলে যায়৷ রাত আটটা পর্যন্ত চলে বিকিকিনি৷ শহর থেকে যাঁরা রোজ এই পথে প্রাতঃভ্রমণে আসেন, তাঁর দোকানের চা খেতে ভোলেন না৷ তাঁদের সঙ্গে শুধু খদ্দের আর চা-ওয়ালার সম্পর্ক নয়৷ নানা বিষয়ে গল্পগুজব হয়৷ তবে বয়সের প্রসঙ্গ উঠতেই একগাল হেসে শতায়ু পরিবারের নানা কাহিনি শোনান মাগুর৷

Advertisement

দোকান লাগোয়া বাড়ি৷ তাই দোকানদারির ফাঁকেফাঁকেই সংসারের টুকিটাকি কাজও সেরে নেওয়া চলে৷ রোজগার কেমন? লাজুক হেসে মাগুরবাবুর জবাব, দিনে হাজার দেড়েক টাকা হয়৷ শীতের বিকেলে চায়ের সঙ্গে চপ-পিঁয়াজিও ভাজেন৷ পঞ্চাশ বছর ধরে চা বিক্রি করে চলেছেন৷ প্রথমে একা৷ পরে দোকান সামলাতে সঙ্গী হন স্ত্রী-ও৷ ভিড় বেশি থাকলে এখন মাঝেমধ্যে খানিকক্ষণ দোকান সামলে দেন নাতবউ৷

এতটাই পরিচিতি যে, ইস্টার্ন বাইপাসের মাগুর মোড় বললে চিনিয়ে দিতে ভুল করে না টোটো, রিকশা থেকে অটো-ট্রেকার৷ কিন্তু দীর্ঘদিনের চায়ের দোকান না কি শতায়ু পরিবার হওয়ায় এই পরিচিতি, প্রশ্নের উত্তরে শুধু মুচকি হাসেন মাগুরবাবু৷ মাগুর রায়ের স্ত্রী-র বয়স এখন পঁয়ষট্টি৷ এক ছেলে, দুই মেয়ে৷ ভরা সংসার৷ ছেলে খগেন কাছেই জলডুমুরর এলাকায় শ্বশুরবাড়িতেই থাকেন৷ তাঁরও বয়স ষাটের ঘরে৷ দুই মেয়েরও বয়স প্রায় ওরকমই৷ নাতি-নাতনিদের বিয়ে দিয়ে এখন ঝাড়া হাত-পা মেয়েরা৷ বড় ছেলের দুই ছেলে৷ তাঁদের আবার একজনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে৷

মাগুর মনে করেন, তাঁদের পরিবারের উপর রয়েছে যমরাজের অশেষ কৃপা! তাই তাঁরা সকলেই দীর্ঘজীবী৷ রোগভোগেরও সেভাবে বালাই নেই৷ তবে, আফসোস একটাই, তাঁর দুই দাদার একজন ছিয়ানব্বই ও অন্যজন বিরানব্বই বছরে পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন৷ ওই চা বিক্রেতার আক্ষেপ, ওঁরা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতেন না তো! তাই এত অল্প বয়সে চলে গেলেন!”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement