সৌরভ মাজি, বর্ধমান: নোটবন্দির ধাক্কা কাটতে না কাটতেই এসেছিল জিএসটি’র নয়া নিয়মকানুন। তা সবে সামলে উঠেছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তারই মধ্যে ফের করোনার কোপ, লকডাউন। বিক্রিবাটা কার্যত বন্ধ। চরম সংকটের মুখে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার তাঁতশিল্পীরা। কয়েক হাজার তন্তবায়ের রুটিরুজি কার্যত বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের সুরাহা দিতে এগিয়ে এল রাজ্য সরকার। তাঁতশিল্পীদের কাছ থেকে এবার সরাসরি বস্ত্র অর্থাৎ শাড়ি কেনা শুরু করল তন্তুজ। মূলত নববর্ষ এবং শারদোৎসবের আগে তাঁতশিল্পীদের কাছ থেকে সরাসরি শাড়ি কিনে থাকে সরকার। এবার লকডাউনের কারণে আগেই তা শুরু করে দিল তন্তুজ।
শনিবার কালনার ধাত্রীগ্রামের তাঁত হাটে শিবির খোলে তন্তুজ। সেখানে এসে তন্তুবায়রা তাঁদের তৈরি তাঁতবস্ত্র সরাসরি বিক্রি করেছেন তন্তুজকে। এই শিবিরের উদ্বোধনে ছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি ও বস্ত্র বিভাগের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। জেলা পরিষেদর সহকারি সভাধিপতি দেবু টুডু। স্বপনবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রচেষ্টায় লাভজনক হয়ে উঠেছে তন্তুজ। রাজ্যের তাঁতশিল্পীদেরও সুদিন এসেছে। কিন্তু কেন্দ্রের নোটবন্দি, জিএসটির প্রভাবে সংকট এসেছিল তাঁতশিল্পেও। এরপর লকডাউন। চরম সংকট। সেখান থেকে তাঁতশিল্পীদের রোজগারের সুযোগ করে দিতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সরাসরি শাড়ি কিনছে তন্তুজ।”
এদিনের কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন তন্তুজের বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সের সদস্য তুলসী সিনহারায়, বিনোদ দেবনাথ, গৌর বসাক, হ্যান্ডলুম দপ্তরের মহকুমা আধিকারিক পলাশ পাল, কালনা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রাবণী পাল প্রমুখ।
জানা গিয়েছে, কালনা মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৪৫ জন তাঁতশিল্পী তাঁতবস্ত্র নিয়ে এসেছিলেন শিবিরে বিক্রি করার জন্য। তাঁরা সকলেই নাম নথিভুক্ত করেছেন। এদিন রাত পর্যন্ত তাঁতবস্ত্র কেনার কাজ চলেছে বলে জানা গিয়েছে। প্রথম দিনই ১৫৫৬ টি শাড়ি কিনেছে তন্তুজ, যার মোট মূল্য ১৯ লক্ষ ৭৮ হাজার ২৩০ টাকা। তুলসী সিনহা রায় জানান, প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগে এইভাবে তাঁতবস্ত্র কেনা হয়। এবার আগে থেকেই তা শুরু করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। হাওড়া, হুগলি, নদিয়া-সহ বিভিন্ন জেলায় এইভাবে শিবির করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.