জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: পেটের টানে গ্রাম ছেড়ে গিয়েছিলেন শহরে। একটু বেশি উপার্জন হচ্ছিল। সংসারে সেই টাকা নিয়ম করে পাঠাতেন তাঁরা। তাতেই পেট ভরে খেতে পারতেন পরিজনেরা। মুখে হাসি ফুটত প্রিয়জনদের। কিন্তু আচমকা রাজ্যে করোনার হানায় বদলে গিয়েছে সব। লকডাউনের পর বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন অধিকাংশ গৃহকর্তা। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না শহরে কাজ করতে আসা পরিচারিক এবং রিকশাচালক। বসিরহাটের স্বরূপনগর থানার উদ্যোগে রবিবার গড়িয়া থেকে আবারও বাড়ি ফিরলেন তাঁরা। লকডাউনে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতে পেরে বেজায় স্বস্তিতে বিপদগ্রস্তরা।
গ্রামে কাজ করে উপার্জন হয় সামান্য। তা দিয়ে সংসার চালানো সমস্যার। তাই স্বরূপনগর থানা এলাকার সীমান্ত গ্রামগুলি থেকে পুরুষ-মহিলারা কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নানা পেশায় যুক্ত হন। মহিলারা মূলত পরিচারিকার কাজ করতেন। পুরুষদের অনেকেই রিকশা চালাতেন। কেউ কেউ আবার দোকানে কাজ করতেন। তাঁরা জানান, লকডাউনের পর থেকে এলাকায় চলছিল না রিকশা। দোকানও নির্দিষ্ট সময়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। বাড়ির মালিকেরা ছুটি দিয়েছেন। পরিচারিকাদের বাড়ি চলে যেতে বলেছেন তাঁরা। কোনও কোনও পরিচারিকার অভিযোগ, তাঁদের প্রায় জোর করেই বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে। ট্রেন, বাস বন্ধ থাকায় বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না তাঁরা।
এরপরই পরিজনদের ফোন করে দুরবস্থার কথা জানান তাঁরা। বিপদগ্রস্তদের পরিজনরা ছুটে যান স্বরূপনগর থানায়। ঘটনার কথা খুলে বলেন৷ স্বরূপনগর থানার পুলিশ আধিকারিক তুষার বিশ্বাস এরপরই গড়িয়া এলাকায় গাড়ি পাঠান। পুরুষ, মহিলা মিলিয়ে মোট ৩২ জনকে স্বরূপনগর থানায় নিয়ে আসেন। পরে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়৷ বিপদের দিনে পরিজনদের ফিরে পেয়ে বেজায় খুশি পরিচারিকা এবং রিকশাচালকের কাজ করা ওই ব্যক্তিরা। পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.