কৃষ্ণকুমার দাস: কোলাঘাটের পর এবার নন্দীগ্রাম। দলহীন, পতাকাহীন বিজয়া সম্মিলনী সমাবেশে আরও এক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন পরিবহণ ও সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। নাম না করে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের প্রতি রাজনীতিতে ভূমিকা নিয়ে তাঁর বার্তা,“আমি ১৯৯৫ সালে প্রথম ভোটে লড়ে অবিভক্ত কংগ্রেসের কাউন্সিলর হয়েছি। আমি প্যারাশুটে করে নামিনি, লিফটে করেও উঠিনি। আমি সিড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি।”
এরপরই তাঁকে ঘিরে সম্প্রতি নানা সংবাদমাধ্যমে যে জল্পনা শুরু হয়েছে তা নিয়ে মুখ খুলেছেন শুভেন্দু। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বা কর্মসূচির প্রতি ইঙ্গিত করে স্পষ্ট করে বলেছেন, তাঁর সম্পর্কে কোনও কথা শুনলে সরাসরি যেন মুখ থেকেই শোনা হয়, অন্যের কথায় বিচার নয়। এরপরই আগামী ১০ নভেম্বর ঐতিহাসিক রক্তাক্ত সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তি সমাবেশের ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু।
করোনার কবল থেকে সুস্থ হয়ে উঠে পুজোর মরশুম কাটিয়ে প্রায় প্রতিদিনই নানা অরাজনৈতিক মঞ্চের কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী। এদিনও নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে (Nandigram) তেমনই মঞ্চ থেকে নাম না করে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। একদিন আগে দিঘায় ব্যক্তিগত সফরে এসে শুভেন্দুর এমন নানাবিধ কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কটাক্ষ করেন। রবীন্দ্রনাথের কবিতার পংক্তি উল্লেখ করে বলেন, “রথ ভাবে আমি দেব, পথ ভাবে আমি/ মূর্তি ভাবে আমি দেব, হাসেন অন্তর্যামী।”
রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরিও গত কয়েকদিনে পরিবহণ মন্ত্রী সম্পর্কে একাধিকবার নানা তির্যক মন্তব্য করেছেন। এদিন চড়া সুরে তার কড়া জবাব দিয়েছেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রধান সেনাপতি। বলেছেন, “ছোটলোকদের দিয়ে বাজে কথা বলিয়ে ভাবছে আমি উত্তর দেব। আমি ওই লেভেলে নিচে নামি না।” এরপরই তিনি সামনে উপস্থিত বিশাল জনসমাবেশে প্রশ্ন তোলেন, “কুকুর মানুষের পায়ে কামড়ালে মানুষ কখনও কুকুরের পায়ে কামড়ায় কি?” শুভেন্দুর এমন তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য নিয়ে কলকাতা পুরভবনে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে (Firhad Hakim) প্রশ্ন করা হলে তিনি কার্যত এড়িয়ে গিয়েছেন। ঘুরিয়ে পুরমন্ত্রীর জবাব,“আমরা সবাই লড়াই করে উঠেছি। কিন্তু আমাদের পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন বলেই সবাই চেনে, ভোট দিয়ে জেতায়।”
এদিনের সভায় শুভেন্দু নিজের রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে কেন তিনি অকৃতদার, সব কিছুর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বলেছেন, প্রাতঃস্মরণীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশ সামন্ত, অজয় মুখোপাধ্যায়, সুশীল ধাড়াদের জীবন-চরিত পড়েই তিনি বিবাহিত জীবনে পা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “পিছুটান রাখতে নেই। নিজের ছোট সংসার নয়, বড় পরিবার, সাধারণ মানুষকে নিয়ে বৃহত্তর পরিবারে থাকব বলেই ঘোষিত অকৃতদার আমি।” এদিন তিনি ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯, ২০১৪, ২০১৬ থেকে আজ পর্যন্ত তাঁর মধ্যে আচার-ব্যবহারের কোনও পরিবর্তন হয়েছে কী না, উপস্থিত জনতার কাছে বারবার তা জানতে চান পরিবহণ মন্ত্রী।
শুনুন তাঁর বক্তব্য:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.