ফাইল ফটো
কৃষ্ণকুমার দাস: রক্তক্ষয়ী সেই সংগ্রামের সময়, ২০০৮ সাল থেকেই তিনি রমজানের ইদে নন্দীগ্রামের শহিদ সংখ্যালঘু পরিবারকে উপহার দেন। এবছর সুপার সাইক্লোন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মধ্যেও ইদের দু’দিন আগেই শনিবার পৌছে গেলেন তাঁদের কাছে। ছয় মুসলিম পরিবারের হাতে তুলে দিলেন নতুন জামাকাপড়, খাদ্যসম্ভার ও শুভেচ্ছাবার্তা। পরে নন্দীগ্রাম ও খেজুরির উপকূলবর্তী ঘুর্ণিঝড় বিধ্বস্ত ১০টি গ্রামে ঘুরে ঘুরে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ পরিচালনা করলেন।
তিনি শুভেন্দু অধিকারী, নন্দীগ্রাম লড়াইয়ের প্রধান সেনাপতি, রাজ্যের সেচ ও পরিবহণমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সাইক্লোন নজরদারিতে রাজ্য প্রশাসনের তরফে তিনি হাজির ছিলেন দিঘা সমুদ্র উপকূলে। ঘণ্টায় ১৮৫ কিমি বেগে ঝড় আছড়ে পড়া সামনে থেকে প্রত্যক্ষ করে পরদিনই সোজা পৌছে যান ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে-গ্রামে। উদ্ধার করা গ্রামবাসীদের সম্পর্কে আশ্রয় শিবিরের খবর নেন। শুক্রবার সতীশ সামন্ত ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের তরফে জেলায় আমফানে মৃত ছয়জনকে দু’লক্ষ টাকা করে তুলে দেন শুভেন্দু। নিজে পাঁচজনকে চেক দিলেও রামনগরে এক মৃতের পরিবারকে চেক পাঠান ছোট ভাই কাঁথি পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সৌমেন্দু অধিকারীর হাত দিয়ে। ভগবানপুর-২, হলদিয়া ব্লক এবং পুরসভা এলাকা ঘুরে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি এবং ত্রাণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন পরিবহণমন্ত্রী। দুর্যোগের দিনে ভূপতিনগর, সুতাহাটা, দেউলপোতার বাসিন্দারা তাঁদের প্রিয় শুভেন্দুকে কাছে পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। এরপর তিনি নির্দেশ দেন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবার যেন সরকারি সাহায্য থেকে যেমন বঞ্চিত না হয় তেমনই দলের কর্মীদের অসহায়দের পাশে থাকতে হবে। তৃণমূলের তরফে তিনি যে সমস্ত জেলায় পর্যবেক্ষক সেখানকার পরিস্থিতি নিয়েও গত তিনদিনে দফায় দফায় রিপোর্ট নিয়েছেন।
রমজানের ইদে প্রতিবছরই নন্দীগ্রামের শহিদ সংখ্যালঘু পরিবারকে উপহার দেন শুভেন্দু। এদিন সকালে সোনাচূঁড়ায় পৌছে প্রথমে ছয় পরিবারকে উপহার, খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। করোনা পরিস্থিতির জন্য সবাইকে ঘরেই এবছর উৎসব করার আবেদন করেন। এরপরই ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি এবং এলাকা প্রত্যক্ষ করতে হলদি নদীর ধার ধরে হাঁটতে শুরু করেন সেচ ও পরিবহণমন্ত্রী। ঘুরে দেখেন ঘূর্ণিঝড় থেকে বাসিন্দাদের বাঁচাতে যে সমস্ত আশ্রয় শিবির করা হয়েছে সেখানকার আয়োজন। প্রতিটি গ্রামে পা রেখেই তিনি তালিকা ধরে ধরে প্রয়োজনীয় ত্রিপল ও খাদ্যসম্ভার যেমন ক্ষতিগ্রস্তদের পৌছে দিতে বলেছেন তেমনই পড়ে থাকা গাছ দ্রুত কাটার নির্দেশ দিয়েছেন। সকলকে আশ্বস্ত করে বলেন, “গ্যারান্টি দিচ্ছি, শীঘ্রই ঘর-বাড়ি তৈরি হয়ে যাবে, পাবেন সরকারি সাহায্য।” এরপর বিডিও, পঞ্চায়েত কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে দু’দিনের মধ্যে সমস্ত গাছ তুলে ফেলার পাশাপাশি বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার নির্দেশ দেন। সরকারি কর্মীদের পাশাপাশি গাছ সরাতে দলের কর্মীরাও সাহায্য করবে বলে শুভেন্দু জানান। ফোনে এদিন শুভেন্দু জানান,“মানুষের পাশে ৩৬৫ দিন থাকা আমার নিয়মিত অভ্যাস। সেই ২০০৬ সাল থেকেই নন্দীগ্রাম ও খেজুরির মানুষের পাশে সারাবছর ধরেই থাকি। ভয়াবহ দুর্যোগের পরে আজও তঁাদের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে দেখা করেছি, প্রয়োজন জেনেছি, ব্যবস্থাও করেছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.