সম্যক খান, মেদিনীপুর: রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) মস্তিষ্কপ্রসূত ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড বণ্টন করছে রাজ্য সরকার। খুব কম সময়ের মধ্যেই এই কার্ডের সুফল পেয়েছেন আমজনতা। তা সত্ত্বেও রাজ্যের শাসকদলকে বিঁধতে এবার সেই ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডকে হাতিয়ার করলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের সভায় তিনি ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডকে তৃণমূলের ‘ভোট কার্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করলেন। যা নিয়ে ফের নতুন করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
ভোটের মুখে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র (Swasthya Sathi) ব্যাপক সাফল্য কিছুটা হলেও চাপে ফেলেছে রাজ্যের গেরুয়া শিবিরকে। প্রকল্পটি নিয়ে তাই যতই বিজেপি নেতারা কটাক্ষ করুন না কেন, ‘দুয়ারে সরকারে’ মানুষজন যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, তাতে জনসমর্থন নিয়ে চিন্তার ভাঁজ বাড়ছে তাঁদের কপালে। অবশ্য সরকারি এই কার্ড নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন অনেকে, এই অভিযোগও উঠছে। আর সেটিকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট প্রচারের অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। কেশপুরের সভায় তাঁর তীব্র কটাক্ষ, ”স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তো তৃণমূলের ভোট কার্ড।”
‘স্বাস্থ্যসাথী’ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি ইস্যুতে এদিন তৃণমূলকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর চ্যালেঞ্জ, খড়গপুরে এবারও তৃণমূলকে হারিয়ে দেবেন। বললেন, ”খড়গপুরে এবারও হারাব। চিন্তা করবেন না। তারপরই বোঝা যাবে, কে জেতায় আর কে হারায়।” এদিন তৃণমূলকে আক্রমণের পাশাপাশি নজিরবিহীনভাবে বামপন্থীদের প্রশংসা শোনা গেল শুভেন্দুর বক্তব্যে। তাঁর কথায়, ”বুদ্ধবাবু সৎ ছিলেন। লক্ষ্মণ শেঠ ছিলেন হার্মাদ। বামেদের আমলে প্রতি বছর এসএসসি হতো। ২০১৪ সালের পর থেকে রাজ্যে আর কোনও এসএসসি হচ্ছে না। বামফ্রন্ট আমলে রাজ্যে কাজ হয়েছিল। তৃণমূল কোনও কাজই করেনি।”
শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়ার পর তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের কটাক্ষ ছিল, ”পচা মাল বেরিয়ে গিয়েছে, ভাল হয়েছে।” এদিনের সভা থেকে তারও উত্তর দিলেন অধিকারী পরিবারের মেজো পুত্র। বললেন, ”পচা মাল বেরিয়ে গিয়েছে বলা হচ্ছে। তো পচা মাল হলে পায়ে কাঁটা ফুটছে কেন? এত যন্ত্রণা কেন?” বিধানসভা ভোট যত এগোচ্ছে, রাজ্যের শাসকদলকে আক্রমণের জন্য আরও নতুন নতুন হাতিয়ার প্রয়োগ করছেন বিজেপি নেতারা, শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের ধারাবাহিকতায় নজর রাখলেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.