সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: হায়দরাবাদের নারকীয় ঘটনার পর থেকেই রাতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে গোটা দেশে। দিল্লি, উন্নাও, হায়দরাবাদের ঘটনা নাড়া দিয়েছে দুর্গাপুরের সুস্মিতা দত্তকেও। তাই এবার মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন দুর্গাপুরের সুস্মিতাদেবী নিজেই এগিয়ে এলেন স্কুটি নিয়ে। একটি অ্যাপ বাইক সংস্থার কাছে রেজিস্ট্রেশন করে দুর্গাপুরের প্রথম মহিলা অ্যাপ বাইক চালক হয়ে উঠলেন দুর্গাপুরের এই গৃহবধূ সুস্মিতা দত্ত।
রাতে দুর্গাপুর শহরে মহিলাদের বাড়ি ফিরতে সমস্যা হয়। পাওয়া যায় না কোনও যানবাহন। বিশেষত কর্মরত মহিলাদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে ওঠে বাড়ি ফেরা। তাই এবার রাতের শহরে এবার মহিলাদের ঘরে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হলেন দুর্গাপুর ইস্পাতনগরীর আইনস্টাইন অ্যাভিনিউর বাসিন্দা সুস্মিতা দত্ত। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে তিনি নিজে একজন মহিলা হয়ে তা করবেন কীভাবে? সুস্মিতার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে এগিয়ে এসেছে অ্যাপ বাইক পরিষেবা প্রদানকারী একটি সংস্থা। ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতেই তারা সুস্মিতার গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করে তাকে নিজেদের চালকের তালিকাভুক্ত করে। ওই সংস্থা ‘ওলা পার্টনার’ নামে একটি অ্যাপ সুস্মিতার মোবাইলে দেয়। ব্যস, তারপর থেকেই উড়ান শুরু সুস্মিতার। অবলীলায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন মহিলাদের পৌঁছে দিচ্ছেন তাদের গন্তব্যে।
[আরও পড়ুন: নেপথ্যে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেও ফের ঊর্ধ্বমুখী তাপমাত্রার পারদ]
দুর্গাপুরেরই মেয়ে সুস্মিতা দুর্গাপুর মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী। দুর্গাপুরেই বিয়ে হয় তাঁর। স্বামী ব্যবসা করেন। বিয়ের পর থেকে সমাজসেবার নেশায় বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। কিন্তু নিজে থেকে কিছু একটা করার জেদ চেপে বসে তার মনে। একটি মহিলা হস্টেলও চালান তিনি। এক মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। এবিষয়ে সুস্মিতা দত্ত জানান, “প্রথম প্রথম পরিবারের সদস্যরা আপত্তি জানিয়েছিল। তবে আমার মনের জোর ও জেদের কাছে হার মানে সবাই। দুর্গাপুরের মেয়ে হয়ে দুর্গাপুরের মেয়েদের সুরক্ষা দেওয়া আমার কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে বলে মনে হয়।” দুর্গাপুরের প্রথম মহিলা অ্যাপ বাইক চালকের এই সাহসে উৎসাহিত দুর্গাপুরের বহু মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.