সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলার বেকার সমস্যা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগের অন্ত নেই। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এসে দাবি করে গিয়েছেন, বাংলার যুবকরা রোজগার পাচ্ছে না। একই কথা বলেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। অথচ, কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যানই বলছে, বাংলার কর্মসংস্থানের হাল দেশের অন্য বড় রাজ্যগুলির তুলনায় অনেকটাই ভাল। গোটা দেশে যখন বেকারত্বের হার ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ, তখন বাংলা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই ভাল পরিস্থিতিতে আছে।
কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের সদ্য প্রকাশিত সমীক্ষা বলছে, ২০১৭-১৮-অর্থবর্ষে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৬.১ শতাংশ। যা ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেই তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার অনেকটাই কম। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে বাংলায় বেকারত্বের হার ছিল ৪.৬ শতাংশ। বড় রাজ্যগুলির মধ্যে তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, তেলেঙ্গানা, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, কেরল, ঝাড়খণ্ড, অসম, ওড়িশার মতো ১১টি রাজ্যে বেকারত্বের হার জাতীয় গড়ের থেকে বেশি। শুধু সার্বিকভাবে নয়, আলাদা আলাদাভাবে পুরুষ এবং মহিলাদের বেকারত্বের পরিসংখ্যানেও জাতীয় হারকে অনেকটাই পিছনে ফেলেছে বাংলা। গ্রাম এবং শহরের যে আলাদা পরিসংখ্যান রয়েছে তাতেও বাংলা বড় রাজ্যগুলির মধ্যে সেরা।
রাজ্যের কর্মসংস্থানের এই আশার খবরের পিছনে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে জোর দেওয়ার প্রবণতাকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। উৎকর্ষ বাংলার মতো প্রকল্প যে রাজ্যের বেকারদের কিছুটা হলেও উপকারে আসছে তা বোঝা যাচ্ছে পরিসংখ্যানেই। অন্যদিকে, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের দাবি, কয়েক বছরে রাজ্যে শ্রমনিবিড় শিল্পের বৃদ্ধি হয়েছে। যার ফলে সাধারণের মধ্যে রোজগার বেড়েছে। রাজ্যে চর্মশিল্পের বৃদ্ধি বেকারত্ব কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে। তবে, বেকারত্বের হার কম হলেও, একটি পরিসংখ্যান কিন্তু বেশ উদ্বেগজনক। সেটি হল কর্মীদের বেতন। পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যে ঠিকা শ্রমিক বা দিনমজুরের সংখ্যা প্রায় ৩১ শতাংশ। অর্থাৎ, প্রত্যেক তিনজন কর্মীর একজন দিনমজুর বা ঠিকা শ্রমিক। রাজ্যের ৫৯ শতাংশ কর্মচারীদের পিএফ-ইএসআইয়ের মতো সামাজিক সুরক্ষা নেই। বিরোধীরা বলছে, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে কাজের অভাব ততটা না হলেও শিক্ষিত বেকারদের মধ্যে যে কাজের যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে, তা এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.