নন্দন দত্ত, বীরভূম: সিউড়ি আদালতের মানবিক মুখ। শুনানি স্থগিত রেখে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সাক্ষীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিলেন বিচারক। ওই কিশোরীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিল সিউড়ি থানার পুলিশ। সিউড়ি থেকে রামপুরহাট পর্যন্ত তৈরি করা হল গ্রিন করিডর। পরীক্ষা দিতে পেরে খুশি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
[বিচারকের দাওয়াইয়ে কাজ, মিষ্টিমুখে পুনর্মিলন সিউড়ির দম্পতির]
ওই কিশোরীর বাড়ি রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লকের জয়সিংহপুর গ্রামে। অভিযোগ, ২০১৫ সালে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে সহবাস করে স্থানীয় এক যুবক। গর্ভবতী হয়ে পড়ে সে। সন্তানেরও জন্ম হয়। কিন্তু, বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে ওই কিশোরী। পকসো আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। ৪ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এখন অবশ্য ধৃতেরা সকলেই জামিনে মুক্ত। তিন বছর ধরে মামলাটি চলছে সিউড়ির বিশেষ আদালতে। নির্যাতিতা ওই কিশোরী এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। শুক্রবার সিউড়ি বিশেষ আদালতে বিচারক দীপ্তেন্দ্রনাথ মিত্রের এজলাসে মামলার শুনানি ছিল। সন্তানকে কোলে নিয়ে আদালতে সাক্ষী দিতে এসেছিল অভিযোগকারিনী কিশোরী। শুনানির শুরুতে বিচারককে সে জানায়, শুক্রবার মাধ্যমিকের ভুগোল পরীক্ষা। বেলা বারোটা থেকে পরীক্ষা শুরু। তার সিট পড়েছে রামপুরহাটের একটি স্কুলে। এরপরই ওই কিশোরীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন সিউড়ির বিশেষ আদালতের বিচারক দীপ্তেন্দ্রনাথ মিত্র। তিনি বলেন, ওই কিশোরীকে যদি সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে যেন তাকে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়। এরপরই তড়িঘড়ি একটি ভাড়ার গাড়ি নিয়ে আদালতে হাজির হন সিউড়ি থানার আধিকারিকরা। সেই গাড়িতে চাপিয়ে গ্রিন করিডর তৈরি করে ওই কিশোরীকে পৌঁছে দেওয়া হয় পরীক্ষাকেন্দ্রে। গ্রিন করিডর দিয়ে সময়মতোই সিউড়ি থেকে রামপুরহাটে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যায় ওই কিশোরী। আদালতে ভূমিকায় খুশি ওই কিশোরী ও তাঁর পরিবারের লোকেরা।
[সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় রাজ্যের, খারিজ বিমল গুরুংয়ের মামলা]
জানুয়ারি মাসের ঘটনা। বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সিউড়ির এক দম্পতি। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর তাঁদের তিন দিন হোটেল থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন সিউড়ি আদালতের বিচারক। স্বামী আর্থিক সমস্যার কথা জানালে, বিচারক তাঁর টাকায় ওই দম্পতিকে হোটেল থাকার নির্দেশ দেন। আদালতের সেই অভিনব সিদ্ধান্তেই জোড়া লেগেছিল সম্পর্ক। সিউড়ি আদালতে একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে আজীবন একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেছিলেন ওই দম্পতি। সেদিনের মতো এদিনও ফের একবার চর্চায় সিউড়ি আদালতের মানবিক মুখ।
ছবি: বাসুদেব ঘোষ
[কে সেবাইত আর কে নয়? তারাপীঠে এবার গোলাপি পোশাকেই পরিচয়]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.