নন্দন দত্ত, সিউড়ি: প্রথমে মিষ্টি মুখ। পরে ‘স্বামী-স্ত্রী’ মিলে সিউড়ির সাজানোপল্লির বিউটি পার্লারের মালকিন শিউলি পালকে খুন করেছিল। পুলিশি জেরায় এমন কথাই স্বীকার করেছে অভিযুক্ত মাধব সিং ও মুনমুন সাহা মণ্ডল। জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমল পাল জানান, খুনের কথা স্বীকার করায় মাধব সিং ও মুনমুন সাহা মণ্ডলকে সিউড়ি থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। মাধবের বাড়ি হাটজন বাজারে। মুনমুন পুরন্দরপুরের বাসিন্দা। ত্রিকোণ প্রেমের ঘুর্ণিচক্রে পড়ে গিয়েছিলেন শিউলি পাল। সেই কারণেই দশমীর দুপুরে তাঁকে নিজের বাড়িতেই খুন হতে হয়।
দশমীর রাতে সাজানোপল্লির নিজের শোওয়ার ঘরে খুন হন বিউটি পার্লারের মালকিন শিউলি পাল। শিউলির বাবা জীতেন ঘোষ জানিয়েছিলেন, খুনি তাঁদের পরিচিত। আসলে পুলিশ লাইনে জীতেনবাবুর বাড়ির নিচে ছ’মাস ভাড়াছিলেন মাধব সিং। তখনই তাঁর মেয়ে পার্লারের মালকিন শিউলির সঙ্গে মাধবের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এদিকে তার আগে থেকেই পুরন্দরপুরের মুনমুনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল মাধবের। যার জেরে নিজের স্বামীকে ছেড়ে মাধবের সঙ্গেই স্বামী-স্ত্রীর মতো থাকত মুনমুন। কিন্তু সম্পর্কের মাঝে শিউলি চলে আসায় তা সহ্য করতে পারছিলেন না মুনমুন। মূলত দশমীর দুপুরে মাধব আর মুনমুন দু’জনে শিউলির সঙ্গে এ নিয়ে বোঝাপড়া করতে শিউলির বাড়িতে গিয়েছিল। মাধব ও মুনমুন ওদিন দুপুর একটা নাগাদ সাজানোপল্লির বাড়িতে ঢোকে। দু’জনেই মিষ্টিমুখ করে। তারপরেই বাদানুবাদ চরমে উঠলে শিউলির মুখ চেপে ধরে মুনমুন। আর তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে মাধব সিং।
উল্লেখ্য, এর আগেও পুরন্দরপুরে শ্লীলতাহানির প্রশ্ন তুলে এলাকায় টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে এই দু’জনের বিরুদ্ধে। এলাকার খবর, মিথ্যা প্ররোচনায় একজনকে ফাঁসাতে গিয়ে আগেও বেশ কিছুদিন জেল খেটেছে মাধব ও মুনমুন। পুলিশের দাবি, ঘটনার দিন দু’জনেই সম্পর্ক নিয়ে উত্তপ্ত ছিল। বিশেষ করে মুনমুন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না শিউলিকে। এদিকে শিউলি মাধবকে ভালবেসে ফেলায় একটা ত্রিকোণ প্রেমের মাঝে পড়ে গিয়েছিল দু’জনেই। সে কথা শিউলির পরিবারের কাছ থেকে তাঁর স্বামীও জানতেন বলে পুলিশের দাবি। অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার সুবিমল পাল জানান, শনিবারই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ছবি: বাসুদেব ঘোষ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.