ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ৩৪ বছরে কিছুই পায়নি নারায়ণগড়৷ তিনি তাই কথা দিয়েছিলেন৷ কথা রাখলেন৷ নারায়ণগড়কে ঢালাও উন্নয়নে ভাসিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ৪১টি মাল্টি সুপার স্পেশ্যালটি হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল পূর্বতন সরকার৷ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট ৪২ তম হাসপাতালটি পেল নারায়ণগড়৷ ৪৬টি কলেজ তৈরির কথা বলেছিল আগের সরকার৷ নারায়ণগড় পেল ৪৭ তম হাসপাতাল৷ সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে এসে একাধিক প্রকল্প ঘোষণার পাশাপাশি মমতা বুঝিয়ে দিলেন উন্নয়নের সঙ্গে থাকলে কী হয়৷ প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র যে কেন্দ্র থেকে জিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন আদপে সেই কেন্দ্রই যে পাদপ্রদীপের অন্ধকারে রয়ে গিয়েছিল বুঝিয়ে দিলেন সে কথা৷ একবারের জন্যও এদিন যদিও সূর্যবাবুর নাম নেননি মমতা৷ কিন্তু সূর্যবাবু স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকার পরও যে এই কেন্দ্র ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবা পায়নি মনে করিয়ে দিলেন সে কথা৷ মানুষ সেখানে একসময় মারা যেত৷ নারায়ণগড় থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে একাধিক কর্মসূচি ঘোষণার করে সেখানকার মানুষকে উন্নয়নের পথে নিয়ে এলেন মমতা৷ বললেন, “৩৪ বছরে স্বাস্থ্য দফতরকে জীবন্ত যমালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ নারায়ণগড়ের মানুষ একটা জিনিস চেয়েছিলেন৷ সেটা আমরা দেব৷”
সোমবার নারায়ণগড়ের মকরামপুরের এই সভা থেকে একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ শুধু হাসপাতাল নয়, কলেজ, খাদ্যশস্যের গুদাম, বিদ্যুতের সাব-স্টেশনের মতো চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ঘোষণার পাশাপাশি কেলেঘাই-কপালেশ্বরী ও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পে নতুন করে কেন্দ্রীয় সরকারি অনুদানের আবেদন করে ইতিমধ্যে প্রস্তাবও জমা দিয়েছে সরকার৷ নারায়ণগড়কে দিয়েই শুরু হল এই জেলার উন্নয়ন কর্মসূচি৷ রিভিউ মিটিংয়ের মধ্যে দিয়ে যার পর্যালোচনাও আজ ঝাড়গ্রামে বসে সারবেন মমতা৷ নারায়ণগড়কে ঘিরে মূলত জঙ্গলমহলের দ্বিতীয় দফার উন্নয়নের কাজ শুরু হল৷ ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি তৈরি হবে বেলদায়৷ এই বেলদাতেই তৈরি হবে কলেজ৷ যার জন্য দশ একর জমিরও ব্যবস্থা হয়েছে৷ ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হবে বিদুতের সাব-স্টেশন৷ মমতা এবারও কথা দিলেন, হাসপাতালের শিলান্যাসের সময়েও তিনি থাকবেন৷ সরকারি ১৪টি প্রকল্পের শিলান্যাস করার সঙ্গে সঙ্গে একগুচ্ছ পরিষেবা প্রদানও হল৷ মমতার স্বপ্নের সবুজসাথী প্রকল্পে সাইকেল থেকে শুরু করে চাষিদের চাষের সামগ্রী দান-সহ সরকরি নানা সুবিধা দেওয়া হল এই মঞ্চ থেকেই৷ জেলার প্রায় ১৬ হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে গেল এই পরিষেবা৷ মমতা বললেন, “মানুষের জয়ে নতুন করে উন্নয়নের কাজ শুরু হচ্ছে৷ এই নারায়ণগড় যার অন্যতম সঙ্গী৷ তাই কৃতজ্ঞতা জানাতে এখানে আমায় আসতেই হল৷” জনপ্রতিনিধিদের সেই প্রকল্প দেখভালেরও দায়িত্ব দিলেন তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.