স্টাফ রিপোর্টার: আজ সিঙ্গুর মামলার রায়৷ প্রস্তাবিত ন্যানো কারখানার জমি নিয়ে আইনি লড়াইয়ে টাটা না কি রাজ্য সরকার, কে শেষ হাসি হাসবে তা পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে বুধবারই৷ ফলে অনিচ্ছুক কৃষকদের হাতে সরকার জমি ফিরিয়ে দিতে সমর্থ হবে কি না তাও স্পষ্ট হবে৷ শুধু তাই নয়, কোনও বেসরকারি সংস্থার জন্য সরকার আদৌ জমি অধিগ্রহণ করে তাদের হাতে তুলে দিতে পারে কি না সে বিষয়েও দিকনির্দেশ করবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত৷ তাই সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের দিকে তাকিয়ে রাজ্যবাসী৷
হুগলির সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর ন্যানো গাড়ি কারখানার জন্য বাম আমলে ৯৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে টাটাদের লিজ দেয় সরকার৷ এর মধ্যে অন্য গুটিকয়েক সংস্থাও ছিল৷ কিন্তু সেই জমি পুরোপুরি হাতে পায়নি টাটারা৷ সেখানকার অনিচ্ছুক কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল শুধু সিঙ্গুর নয়, পুরো রাজ্য৷ বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন৷ পরে নিজেরাই সরে গিয়েছিল টাটারা৷ এবং ক্ষমতায় এসেই প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানকার অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷ প্রথমে অর্ডিন্যান্স এবং পরে দ্রূত আইন তৈরি করে চাষিদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ যার নাম ‘সিঙ্গুর জমি পুনর্বাসন ও উন্নয়ন আইন’৷ এই আইনের মাধ্যমে পুরো জমি ফিরিয়ে নেয় সরকার৷ রাজ্যের আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যায় টাটারা৷ হাই কোর্ট এই আইনকে খারিজ করে দিলে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য৷ বুধবার যার রায় ঘোষণা করবেন বিচারপতি গোপাল গৌড়া ও অরুণ মিশ্রর ডিভিশন বেঞ্চ৷
এদিকে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “সিঙ্গুরের কৃষকদের স্বার্থে দীর্ঘ লড়াই, আন্দোলন, অনশন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিগত বাম সরকার রাজ্যপালের উপস্থিতিতে যে চুক্তি করেছিল তাকে মান্যতা দেয়নি৷ মুখ্যমন্ত্রী হয়েই তিনি কৃষকদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷ আমরা আদালতে কৃষকদের পক্ষেই সওয়াল করেছি৷ আমাদের স্থির বিশ্বাস, আদালত সিঙ্গুরের চাষিদের প্রতি সুবিচার করবে৷” ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান কর্নেল সব্যসাচী বাগচী মঙ্গলবার ফসমির এক সভায় বলেছেন, “টাটাদের মানসিকতা বদলেছে৷ তারা রাজ্যে লগ্নি করতে চায়৷ ওরা আবার সিঙ্গুরে ফিরে আসতে চলেছে৷ তবে পুরো জমি তো ওদের দেওয়া যাবে না৷ তবে ২০০ একর হলেই প্রকল্প হয়৷ তাই হয়তো ৪০০ একর বাদ দিয়েই প্রকল্প করতে পারে ওরা৷” কয়েকদিন আগে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি কলকাতায় এসে বলেছিলেন, বাংলায় লগ্নিতে তাঁদের কোনও বাধা নেই৷ এখানে বিনিয়োগের পরিবেশ রয়েছে৷ এরই মধ্যে আদালতের রায় ঘোষণা হতে চলেছে৷ ফলে সব মহলে উত্তেজনা তুঙ্গে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.