সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: লৌহ আকরিকের (Iron Ore) খনি মুষ্টিমেয় সংস্থার আয়ত্বাধীন। ফলে প্রয়োজনীয় আকরিক পাচ্ছে না তুলনায় ছোট সংস্থাগুলি। বন্ধের মুখে এ রাজ্যের ৬০টি বেসরকারি ছোট ও মাঝারি লৌহ উৎপাদক সংস্থা-সহ মোট ১৫০টি কারখানা। এর জন্য কেন্দ্রীয় নীতিকেই দায়ী করছে ওয়েস্ট বেঙ্গল আয়রন এন্ড ম্যানুফাকাচারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। মঙ্গলবার দুর্গাপুরে (Durgapur) সাংবাদিক সম্মেলনে তারা এ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছে।
এই রাজ্যে পার্শ্ববর্তী ওড়িশা থেকে আয়রন ওর বা লৌহ আকরিক আসে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ওড়িশার ২১ টি আকরিকের খনি নিলাম করে। নিলামের মাধ্যমে দেশের বৃহৎ লৌহ উৎপাদনকারি সংস্থাগুলিই এই খনিগুলির দায়িত্ব পায়। বড় সংস্থাগুলির উৎপাদন বজায় রাখায় ছোট সংস্থাগুলির
কপালে আর লৌহ আকরিক জুটছে না। ফলে এ রাজ্যের দুর্গাপুর,আসানসোল,পুরুলিয়া,বাঁকুড়া ও খড়গপুরে ৬০ টি বেসরকারি লৌহ
ইস্পাত কারখানা ও ১৫০ টি ইন্ডাকশন ফার্নেস ও রি–রোলিং মিল বন্ধ
হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইস্পাত কারখানাগুলির মালিক
সংগঠন।
দেশের মোট ২১ টির মধ্যে ১০ টি লৌহ খনি বৃহৎ সংস্থার হাতে থাকলেও ১১ টি খনি তুলনায় ছোট সংস্থার আওতায়। কিন্তু তারাও নানা কারণে উৎপাদন
করতে পারছে না বলে দাবি সংগঠনের। রাজ্যে বছরে ৩৬ মিলিয়ন টন
লৌহ আকরিকের প্রয়োজন। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ।
লকডাউনের কারনে উৎপাদন ব্যাহত, কমছে দৈনিক যোগানও। মজুতের পরিমাণও কমতে থাকায় তাই ভবিষ্যতে যোগান সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে
বলেই মনে করছেন শিল্পদ্যোগীরা।
সংগঠনের সদস্য গোপাল আগরওয়াল জানান,“ মুষ্টিমেয় বৃহৎ সংস্থার হাতে খনিগুলি চলে যাওয়ার ফলেই এই সংকট দেখা দিয়েছে। ওই সংস্থাগুলি নিজেদের প্রয়োজনের পর অতিরিক্ত আকরিক তাদেরই পছন্দের সংস্থাকে দিচ্ছেন। ফলে আমাদের মতো যাদের হাতে খনি নেই, যারা অন্যের কাছ থেকে আকরিক কিনে উৎপাদন বজায় রাখি, তারা আকরিক পাচ্ছিনা।”
এই ২১০ টি কারখানায় ১ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। কেন্দ্রের কাছে
বিকল্প প্রস্তাবও দিয়েছে সংগঠন। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী ও উড়িষ্যা সরকারের প্রধান সচিবকে চিঠিও দিয়েছে সংগঠন। তাদের প্রস্তাব, কেন্দ্র প্রতিবছর লৌহ আকরিকের দাম স্থির করে দিক। ৮০ শতাংশ উৎপাদন না করলে খনি নিয়ে নেওয়া হবে বলেও নির্দেশ জারি করুক। উৎপাদনের নূন্যতম ২৫ শতাংশ মুক্ত বাজারে বিক্রি করতে হবে। সরকারি সংস্থাকেও খনি চালাতে দিতে হবে। যদিও এখনও রাজ্যের সঙ্গে এই নিয়ে কোন কথা হয়নি বলে জানান ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আয়রন এন্ড স্টীল ম্যানুফ্যাকচারারর্স ওয়েলফেয়ার
অ্যাসোসিয়েশন’এর সভাপতি শংকর আগরওয়াল। তাঁর দাবি, কেন্দ্র ও রাজ্য বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক।”
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.