Advertisement
Advertisement

Breaking News

Katwa

সাক্ষাৎ ভগবান! সংকটের মাঝে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুকে রক্ত দিলেন খোদ হাসপাতাল সুপার

রক্তসংকটের সময় অপরের পাশে দাঁড়ান, সকলের উদ্দেশে বার্তা সুপারের।

Super of Katwa Sub-Divisional Hospital saves a child suffering from Thalassemia by donating blood of his own | Sangbad Pratidin

ছবি: জয়ন্ত দাস।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 23, 2022 6:27 pm
  • Updated:April 23, 2022 6:39 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: এ যেন সাক্ষাৎ ভগবান! থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে রক্ত দেওয়ার জন্য যখন এখান থেকে ওখানে ছুটে বেড়াচ্ছেন মা, সর্বত্র মিলছে শুধুই প্রত্যাখ্যান, ঠিক সেই সময়েই ঈশ্বররূপেই যেন সামনে এসে দাঁড়ালেন কাটোয়া (Katwa) মহকুমা হাসপাতালের সুপার। তিনি নিজেই রক্ত দিয়ে বাঁচালেন ওই শিশুকে। শিশুর সঙ্গে তাঁর নিজের রক্তের গ্রুপ মিলে যাওয়ায় এভাবে মুশকিল আসান হয় বলেই মত সুপার সৌভিক আলমের। আর খোদ সুপারের এই অবদানে আপ্লুত শিশুর পরিবার।

কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডাঃ সৌভিক আলম। ছবি: জয়ন্ত দাস।

বেশ কিছুদিন ধরেই চরম রক্তসংকট চলছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের হেমরাজ ব্লাডসেন্টারে। দিশেহারা রোগীর পরিবার পরিজনরা। শনিবার রক্তের ভাণ্ডার একেবারে শূন্য। এই পরিস্থিতির মধ্যে সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে রক্ত দেওয়ার জন্য কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন মা। শিশুটি থ্যালাসেমিয়ায় (Thalassemia) আক্রান্ত। কিন্তু অসহায় বধূ রক্তের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন হাসপাতাল চত্বরে। অবশেষে ত্রাতার ভূমিকায় এগিয়ে এলেন খোদ হাসপাতাল সুপার ডাঃ সৌভিক আলম। তিনি নিজেই রক্ত দিলেন ওই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুটিকে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: উত্তরাখণ্ডের পর উত্তরপ্রদেশেও চালু হতে পারে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি! ইঙ্গিত যোগীর ডেপুটির]

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বস্থলী থানার পাটুলি এলাকায় বাসিন্দা গৃহবধূ টুম্পা পণ্ডিত এদিন শনিবার তার সাড়ে তিনবছরের মেয়ে বর্ষাকে নিয়ে আসেন কাটোয়া হাসপাতালে। বর্ষা থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। তাকে নিয়মিত রক্ত দিতে হয়। টুম্পাদেবী বলেন, “গত ৯ মার্চ মেয়েকে কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে এসে রক্ত দেওয়া হয়েছিল। আবার রক্তের প্রয়োজন পড়ে। তাই ব্লাডসেন্টারে এসে খোঁজখবর নিই। কিন্তু কাটোয়া হাসপাতাল ব্লাডব্যাংকে বলে দেওয়া হয় একবোতলও রক্ত নেই।তাই হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে ঘুরছিলাম। যাকে সামনে পেয়েছি রক্তের জন্য অনুরোধ করেছি।”

Katwa
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বর্ষা ও তার মা। ছবি: জয়ন্ত দাস।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় টুম্পাদেবী তার মেয়েকে বাঁচাতে রক্তের জন্য যখন অসহায়ভাবে ছোটাছুটি করছিলেন, তখন খবর যায় কাটোয়া হাসপাতালের সুপার ডাঃ সৌভিক আলমের কাছে। তিনি এও জানতে পারেন ওই শিশুর রক্তের গ্রুপের সঙ্গে তার রক্তের গ্রুপের মিল রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সুপার ঠিক করেন তিনিই শিশুটিকে রক্ত দেবেন। হাসপাতালের ব্লাডসেন্টারে এসে সুপার রক্তদান করেন। তারপর সেই রক্ত দেওয়া হয় বর্ষাকে।

[আরও পড়ুন: রাজস্থান ম্যাচে ‘নো-বল’ ঘিরে ধুন্ধুমারের জের, দল তুলে নিতে চাওয়ায় কড়া শাস্তির মুখে পন্থ]

টুম্পাদেবীর স্বামী গণপতি পণ্ডিত রাজমিস্ত্রি। দুই মেয়ের মধ্যে বর্ষা ছোট। জন্মের পর থেকেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত বর্ষা। টুম্পাদেবী বলেন, “ভাবতেই পারিনি মেয়ের জন্য এভাবে রক্তের জোগাড় হবে। সুপার সাহেব যে উপকার করলেন তা আজন্ম মনে রাখব।” ডাঃ সৌভিক আলম বলেন, “কয়েকদিন ধরেই ভীষণ রক্তসংকট চলছে। ওই বাচ্চা মেয়েটির রক্তের খুব প্রয়োজন ছিল। আমি চাই আপামর মানুষ যেন এই রক্তসংকটের সময় অপরের পাশে দাড়ানোর মনোভাব রাখেন।”

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement