দেবব্রত মণ্ডল: সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘ-মানুষের লড়াইয়ের ইতিহাস ভারত তথা বিশ্বের কাছে সুবিদিত। এবার সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ পেল অনন্য সম্মান। যা সুন্দরবনের গর্বের মুকুটে যোগ করল নতুন পালক। আজ, শুক্রবার ২৭ জুলাই বিশ্ব ব্যাঘ্র দিবস৷ আর এই ব্যাঘ্র দিবসে ইউনেস্কোর এই ঘোষণা সুন্দরবনকে অন্য মাত্রা দিল৷
কয়েক মাস আগে ইউনেস্কোর ‘ম্যান অ্যান্ড বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ প্রোগ্রাম’-এ পৃথিবীর সেরা ৩০টি স্থানের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে সুন্দরবন। ভারতবর্ষের ১২টি স্থান এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সকলকে পিছনে ফেলে নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছে সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ। এই বিশ্ব প্রতিযোগিতায় এরপর আছে ভারতেরই আগাস্থা মালাই বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।
সুন্দরবনের আয়তন প্রায় দশ হাজার বর্গকিলোমিটার। যার বেশিরভাগটাই বাংলাদেশের মধ্যে৷ পশ্চিমবঙ্গ সীমানার মধ্যে আছে ৩,২৮,৬৮০ একর৷ ১৯৮৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থান বলে ঘোষণা করে৷ সেই সুবাদে সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ থেকে একটি এক মিনিটের ভিডিও পাঠানো হয় দিল্লিতে। সেখান থেকে ইউনেস্কোয় পাঠানো হয় সেটি। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে৷ বায়োস্ফিয়ারের উপর তৈরি করা এই ভিডিওটিতে দেখানো হয়েছে কীভাবে সুন্দরবনের মানুষের সঙ্গে প্রতিনিয়ত জীবিকার জন্য লড়াই চলে বন্যপ্রাণীদের। মানুষের সঙ্গে জঙ্গলে বাঘের লড়াইয়ের ঘটনা ঘটলেও লোকালয়ে চলে আসা প্রাণীকে কোনোভাবেই হত্যা করেন না সুন্দরবনবাসীরা।
সুন্দরবনের জঙ্গলে বা নদীতে বাঘের আক্রমণের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। নিহতও হচ্ছে বহু মানুষ। সেই অবস্থার উন্নতির জন্য স্থানীয় মানুষের মধ্যে বাড়ানো হচ্ছে কর্মসংস্থানমুখী বিভিন্ন প্রকল্প। গ্রামের মানুষকে কীভাবে সচেতন করা হচ্ছে তাও দেখানো হয়েছে এই ভিডিওতে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলের জন্য তৈরি ফোরাম ফর সায়েন্স টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশনের তরফে এই ভিডিওগুলি প্রকাশ করা হয়। ইউনেস্কোর ম্যান অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল প্রোগ্রামে সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাড়াতে দেখানো হবে এই সুন্দরনের উপর তৈরি ভিডিওটি। ডব্লুডব্লুএফের কোঅর্ডিনেটর রাতুল সাহা বলেন, “দেশের ১২টি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের মধ্যে দু’টি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ এই তালিকায় স্থান পেয়েছে। আমরা গর্বিত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.