অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: সুমিত সাউ। রিভলবার হাতে রামনবমীর মিছিলে গিয়েছিল যে তরুণ। রামনবমীর হিংসায় উসকানি দেওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ যার নামে। সে আসলে বিজেপি করত টাকার লোভে। বিজেপি করলে কড়কড়ে নোট পেত ছেলে। স্বীকার করে নিলেন খোদ সুমিতের মা। স্পষ্ট বলে দিলেন, নগদ টাকার লোভে সে গেরুয়া শিবিরের হয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতেও যেত।
হাওড়ার শিবপুরের অশান্তির পরদিনই একটি ভিডিও টুইট করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। যাতে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে মিছিলে দেখা গিয়েছিল সুমিত সাউকে। উনিশ বছরের সুমিতকে বিহারের মুঙ্গের থেকে গ্রেপ্তার করেছে হাওড়া সিটি পুলিশ। সে খবর পাওয়ার পর মঙ্গলবার সালকিয়ার শম্ভু হালদার লেনের বাড়িতে বসে সুমিতের মা সোমাদেবীর প্রতিক্রিয়া, “একুশের বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই ছেলে বিজেপি করত। হাতে হাতে কড়কড়ে নোট মিলত, তাই দলের হয়ে নানা জায়গায় যেত ঝান্ডা লাগাতে, মিছিল করতে। সে দিনও পার্টির হয়ে রামনবমীর মিছিলে গিয়েছিল। কিন্তু ওর হাতে বন্দুক এল কীভাবে, জানি না।’’
এদিন সালকিয়ায় সুমিতের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, পরিবারে রয়েছেন বাবা-মা ও দুই বোন। বাবা চিন্টু সাউ পেশায় গাড়িচালক। সুমিত কার্যত বেকার, মাঝেসাঝে বাবার মালবাহী গাড়ির খালাসির কাজ করে। পরিবারের অন্যদেরও বক্তব্য, সুমিত গত বিধানসভা নির্বাচনে টাকার বিনিময়ে বিজেপির হয়ে খাটাখাটনি করেছিল। সেই শুরু। কিন্তু ও আগ্নেয়াস্ত্র কোথায় পেল, সে ব্যাপারে তাঁরা সকলে অন্ধকারে।
মঙ্গলবার সকালে ধৃতকে মুঙ্গেরের আদালতে তুলে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসার প্রস্তুতি শুরু করে বাংলার পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা জানান, ধৃতকে হাওড়া আদালতে পেশ করার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডি নিজের হেফাজতে নেবে। জানার চেষ্টা হবে, কার নির্দেশে ও কী উদ্দেশ্যে সে রামনবমীর মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গিয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, সেদিন সুমিতের সঙ্গে শিবপুরের আরও কিছু কুখ্যাত দুষ্কৃতী রামনবমীর (Ram Navami) মিছিলে হাজির ছিল। তাদের অনেকেই ভিনরাজ্যে পালিয়েছে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। ‘‘মিছিলে প্রচুর বাইরের ছেলে ছিল। ভিনরাজ্যের বাসিন্দা ওই দুষ্কৃতীরা স্থানীয় দুষ্কৃতীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অশান্তি পাকিয়েছে,’’ মন্তব্য এক সূত্রের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.