চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: আগ্নেয়াস্ত্র মামলায় বিজেপির নন্দীগ্রাম তিন মণ্ডলের সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী ‘ঘনিষ্ঠ’ শ্যামাপ্রসাদ মাইতিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তমলুকের এক গোপন ডেরা থেকে এই বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার বিজেপি নেতার গ্রেপ্তারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তার বিরুদ্ধে বেআইনি অস্ত্র কারবারের অভিযোগও রয়েছে। পাশাপাশি আরও অভিযোগ, তিনি বিজেপি আশ্রিত সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দিয়েছেন তার নন্দীগ্রামের গোকুলনগর এলাকার পার্টি অফিসে।
গত ২১ জুলাই তৃণমূল নেতা-কর্মীরা খেজুরি থেকে ব্রিগেডে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা দেন। তখন খেজুরি ২ নম্বর বিডিও অফিস ঘেরাও করার নামে তাদের উপর সশস্ত্র আক্রমণ করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা । ঘটনায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক জখম হন। সেই ঘটনায় খেজুরির সেরখানচকের চন্দন কোলা নন্দকুমারের সহদেব দাসের নাম মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে। এই দুই অভিযুক্তকে শ্যামাপ্রসাদ মাইতি তার গোকুলনগরের বিজেপি পার্টি অফিসে লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ আগেই তাদেরকে ওই দলীয় কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করেছে। আর বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হন তাদের আশ্রয়দাতা শ্যামাপ্রসাদ।
খেজুরি দু’নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল কুমার মিশ্র জানান, “ধৃত দুষ্কৃতীরাই পঞ্চায়েত ভোটের সময় খেজুরি এলাকায় ভোট লুটপাট করেছে। তাদের বেশ কয়েকজন এখনও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। সেই দুষ্কৃতীদের পৃষ্ঠপোষক শ্যামাপ্রসাদ একদিন গ্রেপ্তার হবে জানতাম। বৃহস্পতিবার তাই ঘটল।” তবে নন্দীগ্রামের গোকুলনগর এলাকায় বিজেপির মণ্ডল সভাপতি হলেও শ্যামাপ্রসাদের অপরাধমূলক কাজ সম্পর্কে মুখ খুলেছে তৃণমূল শিবির। তিনি নেতা হয়েও অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। তৃণমূলের নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ জানান, “বিজেপির নন্দীগ্রাম তিন নম্বর মণ্ডল সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মাইতি নেতাগিরির আড়ালে দুষ্কর্ম করতেন। তিনি অন্ধকার জগতের দুষ্কৃতী বললেও কোন অংশে ভুল নয়। পুলিশের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছিল বলেই শ্যামাপ্রসাদ মাইতি গ্রেপ্তার হয়েছেন। “
নন্দীগ্রামের গোকুলনগর এলাকার তৃণমূল নেতা জয়দেব দাস জোরাল অভিযোগ করে বলেন, “শ্যামাপ্রসাদ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করতেন। তার পার্টি অফিসে বোমা বাঁধার কাজ হত। এলাকায় সন্ত্রাস চালাতেন তিনি। ইতিমধ্যে বহু লোকের ঘরবাড়ি ভেঙেছেন এবং মারধর করেছেন।” যদিও স্থানীয় বিজেপি শিবির এই ঘটনার পিছনে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সদস্য অভিজিৎ মাইতি জানান, “শ্যামাপ্রসাদের মাইতির মণ্ডল এলাকায় গোকুলনগর এবং সোনাচূড়া গ্রামপঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। কালীচরণপুর গ্রামপঞ্চায়েতটিতে বেশ ভাল সাফল্য করেছে বিজেপি। এসব শাসক শিবিরের চক্ষুশুল হয়েছে। যে কারণে মিথ্যা অস্ত্র মামলার অভিযোগ দিয়ে শ্যামাপ্রসাদকে গ্রেপ্তার করা হল। তবে এভাবে বিজেপিকে রোখা যাবে না নন্দীগ্রামের মাটিতে।” আগ্নেয়াস্ত্র মামলায় গোকুলনগর এলাকার আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ তাদের হন্যে হয়ে খুঁজছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.