অরূপ বসাক, মালবাজার: অবাধ্য ছাত্রদের অনুশাসন, শৃঙ্খলার পাঠ পড়াতে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত পদক্ষেপই নিল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনাস্থল মালবাজার (Malbazar)মহকুমার ওদলাবাড়ি উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বেছে বেছে ২০-২৫ জন ছাত্রের বিশেষভাবে ‘কেয়ারি’ করা চুল স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক নিজেরাই কেটে (Hair cut) দিলেন। শিক্ষকদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
বিষয়টি নিয়ে স্কুলের টিচার ইন চার্জ নিরুমোহন রায় বলেন, “অভিভাবকদের মিটিংয়ের পাশাপাশি বেশ কিছুদিন স্কুল শুরুর আগে প্রেয়ার লাইনে, এমনকী প্রতিটি ক্লাসে বারবার ছাত্রদের বারণ করা হয়েছে বিশেষ ছাঁটের চুল কেটে স্কুলে না আসতে। এর কুপ্রভাব অন্য সাধারণ ছাত্রদের উপর পড়ছে।মন পড়াশোনার থেকে সরে গিয়ে স্টাইলের দিকে ঝুঁকছে। আখেরে নষ্ট হচ্ছে ছাত্রদের ভবিষ্যৎ। তাই এই পদক্ষেপ।”
অধিকাংশ ছাত্ররা শিক্ষকদের এমন উপদেশ মেনে চললেও বিদ্যালয়ের আরেকদল ছাত্র কিছুতেই কথা শুনছিল না বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। বিশেষ স্টাইলে মাথার উপর ঝাঁকড়া রঙিন চুল, কানের পাশে চুলগুলো একেবারে ছোট করে ছাঁটা অবস্থায় স্কুলে আসতে শুরু করে তারা। ছোঁয়াচে রোগের মতো চুলের ‘কেয়ারি’ করার নেশা পেয়ে বসতে শুরু করেছিল বাকি ছাত্রদেরও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই তাই অবাধ্য ছাত্রদের ‘কেয়ারি’ করা গোছা গোছা চুল ছেঁটে দিয়ে স্কুলের বাকি ছাত্রদের একটি বার্তা দেওয়া হল।
শনিবার রীতিমতো চিরুনি, কাঁচি নিয়ে স্কুলের টিচার ইন চার্জ (Teacher In charge) নিরুমোহন রায়, গুরুপদ মণ্ডল-সহ অন্যান্য শিক্ষকরা অবাধ্য ছাত্রদের লাইনে দাঁড় করিয়ে একের পর একের চুল ছেঁটে একেবারে স্বাভাবিক করে দিয়েছেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ভিডিও স্কুলের ফেসবুক পেজে (Facebook)লাইভ হতেই শিক্ষকদের এমন সাহসী কর্মকাণ্ডকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন বহু মানুষ।
বর্তমান শিক্ষানীতিতে যেখানে ছাত্র ছাত্রী দের যে কোনও রকম শাস্তি দেওয়া অপরাধ বলে গণ্য করা হয় সেখানে একদল ছাত্রকে বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা, অনুশাসন, শালীনতার পাঠ পড়াতে ওদলাবাড়ি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এমন প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রায় প্রত্যেকেই। অভিভাবক শঙ্কর বিশ্বাস, তপন সাহাদের বক্তব্য, ভাল কাজ করেছে শিক্ষকরা। স্কুলে পড়াশোনা জায়গা, সেখানে এই ভাবে চুলের কাটিং মেনে নেওয়া যায় না। এদের দেখে স্কুলের অন্য ছাত্ররা শিখবে। সমস্ত স্কুলে এরকম করা উচিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.