ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: পরীক্ষায় পাশ-ফেলটা বড় কথা নয়। বরং প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠুক বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা। এমনটাই চেয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাখ ঠাকুর স্বয়ং। তাই চার দেওয়ালের ভিতরে নয়, আজও খোলা আকাশের প্রকৃতির মাঝেই চলে পঠনপাঠন। কিন্তু, নিয়মাফিক অবশ্য পরীক্ষাও নেওয়া হয় বিশ্বভারতীতে। আর সেই পরীক্ষায় যাঁরা ফেল করেছেন, পাশ করানোর দাবিতে আন্দোলনে নামলেন তাঁদের একাংশ! সাপ্লিমেন্টরির পরীক্ষার দাবিতে উপাচার্যের অফিসের বাইরের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিলেন বিক্ষোভকারী। বিশ্বভারতীর উপাচার্য সবুজকলি সেন অবশ্য জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের দাবি নিয়ে তিনি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। তাঁর কঠোর মনোভাবে খুশি অধ্যাপকরা।
[গোল বাঁচাতে গিয়ে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত তরুণ ফুটবলার]
বিশ্বভারতীর বিশ্ববিদ্যালয়েও সাপ্লিমেন্টরি পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল। বিভিন্ন সেমেস্টারের যাঁরা ফেল করতেন, তাঁরা সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিতেন। এভাবে বছর বছর পাশ করে যেতেন পড়ুয়ারা। অনেকে আবার একাধিকবার পরীক্ষা দিয়েছেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠক করেন উপাচার্য সবুজকলি সেন। সূত্রের খবর, বৈঠকে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা তুলে দেওয়ার দাবি জানান বেশিরভাগ অধ্যাপকই। তাঁদের বক্তব্য, বারবার সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নিতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বড়কথা, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নিয়ে ফেল করা পড়ুয়াদের পাশ করানো বিদ্যালয়ের কাজ নয়। শেষপর্যন্ত, অধ্যাপকদের দাবি মেনে বিশ্বভারতীতে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা তুলে দেন উপাচার্য সবুজকলি সেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নেওয়ার সংস্থান আছে ঠিকই। প্রাক্তন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের আমলেই পরীক্ষা চালু হয়েছিল।
রবিবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য সবুজকলি সেনের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান ২০ থেকে ২৫ জন। বিক্ষোভকারীদের বিদ্যা, শিক্ষা ও ভাষা ভবনের পড়ুয়ারা। তাঁরা সেমিস্টারের পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নিয়ে পাশ করিয়ে দিতে হবে। শুধু বিক্ষোভ দেখানোই নয়, উপাচার্যের অফিসের বাইরের গেটে তালাও ঝুলিয়ে দেন পড়ুয়ারা। বিক্ষোভের মুখে অবশ্য অনড় মনোভাব উপাচার্যের। সবুজকলি সেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সাপ্লিমেন্টরি পরীক্ষা নিয়ে তিনি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। উপাচার্যের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপকরাও। অধ্যাপকসভার সম্পাদক গৌতম সাহা বলেন, ‘আগের উপাচার্য বেআইনি কাজ করেছিলেন, তার দায়িত্ব কেউ নেবেন না। বর্তমান উপাচার্যের সিদ্ধান্তকে আমরা সর্মথন জানাচ্ছি।’ এদিকে আবার সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিয়ে পাস করা পড়ুয়ারা চাকরির ক্ষেত্রে বিপদে পড়বেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্বভারতীর আশ্রমিকরাও।
[ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ৩২ হাজার টাকা চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীদের মারধর]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.