Advertisement
Advertisement

Breaking News

ডেঙ্গু

ডেঙ্গু সচেতনতা মিছিলে বেরিয়ে অসুস্থ বহু পড়ুয়া, ভাঙচুর স্কুলে

গাইঘাটা থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

Students get sick after rally for Dengue awareness
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:August 9, 2019 9:04 pm
  • Updated:August 9, 2019 9:05 pm  

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইঘাটা: ডেঙ্গু সচেতনতা মিছিলে বেরিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ল বহু পড়ুয়া। তাদের বনগাঁ মহাকুমা হাসপাতাল ভর্তি করে শিক্ষক ও স্থানীয়রা৷ ঘটনার জেলায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এলাকায়। উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা স্কুলে গিয়ে সন্তানদের অনেকের খোঁজ না পেয়ে স্কুলে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার দুপুরে গাইঘাটা থানা এলাকার ঘোঁজা হাই স্কুলে। স্কুল ভাঙচুরের খবর পেয়ে গাইঘাটা থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

সূত্রে জানা গিয়েছে, গাইঘাটার ঘোঁজা এলাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে বেশ কয়েকজন৷ এলাকার মানুষকে সচেতন করতে ঘোঁজা হাই স্কুলের পক্ষ থেকে শুক্রবার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ডেঙ্গু সচেতনতা বিষয়ে মিছিল করা হয়। সেই মিছিলে হাঁটার পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে বহু পড়ুয়ারা। দ্রুত তাদের বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। পড়ুয়াদের সঙ্গে হাসপাতালে এসেছিলেন ওই বিদ্যালয়ের সহ-প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ সরকার। তিনি বলেন “আমরা বলেছিলাম কারও শরীর খারাপ থাকলে তাদের মিছিলে হাটার দরকার নেই৷ কিন্তু মিছিল থেকে ৩-৪ জন পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। কিন্তু তারপর একে একে বহু পড়ুয়া অসুস্থ বোধ করলে ঝুঁকি না নিয়ে তাদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি৷”

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়াদের অসুস্থ হওয়ার ঘটনার জেরে অভিভাবকেরা ও স্থানীয় কিছু মানুষ প্রধান শিক্ষকের ঘরে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এদিন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল একের পরে গাড়িতে ঢুকছে অসুস্থ পড়ুয়ারা। ইঞ্জিন ভ্যানের উপরে দুজন অসুস্থ পড়ুয়া শুয়ে ছিল। তাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে স্থানীয় মানুষজন। হাসপাতাল সুপার শংকর প্রসাদ মাহাতো নিজেই ওই ছাত্রদের পরীক্ষা করে দেখেছেন৷ একাদশ শ্রেণির ছাত্রী বিনা মণ্ডল জানালেন, “আমরা সবাই ডেঙ্গু সচেতনতা মিছিলে বেরিয়েছিলাম। শিক্ষকেরা বলেছিলেন, অল্প রাস্তা যাবেন৷ কিন্তু বাস্তবে ৭-৮ কিলোমিটার আমরা হেঁটেছি। তারপরেই একে একে সহপাঠীরা অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে। আমি কয়েকজন সহপাঠীকে নিয়ে একটা ইঞ্জিন ভ্যানে করে হাসপাতালে এসে পৌঁছাই।”

Advertisement

বনগাঁ মাল্টি-স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে গিয়ে দেখা গেল মেঝেতে শয্যা পেতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চিকিৎসা চলছে। আয়া, নার্স ও চিকিৎসকেরা তৎপরতার সঙ্গে পড়ুয়াদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন। ছাত্রীদের অনেকেরই নাকে লাগানো অক্সিজেন মাস্ক। হাসপাতালের গেটে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা ভিড় করে রয়েছেন। বাহিনী নিয়ে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ আধিকারিকরা। হাসপাতালের গেটের বাইরে বসে কাঁদছিলেন অভিভাবক অর্চনা মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে অর্চনা একাদশ শ্রেণিতে পড়ে৷ স্কুল থেকে সচেতনতার জন্য পদযাত্রায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে৷ শুনে হাসপাতালে ছুটে এসেছি। জানি না মেয়ে কেমন আছে৷”

হাসপুর থেকে এসেছেন অভিভাবক বিশ্বজিৎ পাল। তিনি জানান, “আমার ভাইজি অর্পিতা দশম শ্রেণির ছাত্রী৷ সেও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শুনলাম ৬০-৭০ জন ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে৷ এখনও কোনও ডাক্তারবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করে উঠতে পারিনি। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৫ জন মতো পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে এসেছিল৷ স্যালাইন, অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে তাদের। সকলের অবস্থা স্থিতিশীল। হাসপাতাল সুপার শংকর প্রসাদ মাহাতো বলেন, “গরমের মধ্যে হাঁটতে গিয়ে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে।” সেই দেখাদেখি অন্যরাও আক্রান্ত হয়। বেশিরভাগই পড়ুয়ারাই মাস-হিস্টোরিয়াতে আক্রান্ত হয়েছিল। রাতে অনেককেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement