ছবি: প্রতীকী
শঙ্করকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ক্লাসের পঠনপাঠন ছেড়ে, স্কুলের রান্নাঘরে গিয়ে মিড ডে মিলের সবজি কাটছে পড়ুয়ারা। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের পারধা প্রাথমিক স্কুলে। শুক্রবার চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে জেলা প্রশাসনে। যদিও খুদে পড়ুয়াদের দিয়ে জোগাড়ের কাজ করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দুই রাঁধুনি। উলটে ঘটনা সামনে আসতেই পড়ুয়াদের কার্যত ধাক্কা দিয়ে ক্লাসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্কুলের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের অবশ্য দাবি, প্রতিদিনই তাদের সবজি কাটতে হয়।
শুক্রবার বেলা একটা নাগাদ পারধা প্রাথমিক স্কুলের ভিতরে ঢুকতেই নজরে পড়ে, স্কুলের বারান্দায় রাখা বড় বড় গামলা। তাতে রাখা আলুসিদ্ধ। সেই গামলার চারপাশে গোল হয়ে বসে সিদ্ধ আলুর খোসা ছাড়াচ্ছে খুদে পড়ুয়ারা। তারা সবাই প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রী। সেখানে এগিয়ে যেতেই দরজা আগলে দাঁড়ান রাঁধুনিরা। তারপর খুদে পড়ুয়াদের কার্যত ধমকে ক্লাসঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কেন খুদে ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যবই ছেড়ে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ? এই প্রশ্নে অবশ্য দায় ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। দায় ঠেলে দিয়েছে রাঁধুনিদের দিকেই। সাফ দাবি, “এটা ঠিক নয়। রাঁধুনিদের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে।”
স্কুল সূত্রে খবর, এই স্কুলে মোট দু’জন রাঁধুনি রয়েছেন। তাঁরা হলেন অণিমা বর্মন ও অসীমা সরকার। কিন্তু তারপরও পড়ুয়াদের রান্নার কাজে লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন দুই রাঁধুনি। তাঁরা বলেছেন, “আমরা ওদের কাজ করতে বলি না। আজই প্রথম কাজ করছে। তাছাড়া ওরা নিজেরাই কাজ করতে আসে।” কিন্তু পড়ুয়ারা অন্য কথা বলছে। রোজই নাকি পড়াশোনা ফেলে তাদের রান্নার কাজে হাত লাগাতে হয়।
এহেন অভিযোগ শুনে জেলা স্কুল পরিদর্শক সুজিত মাইতি বলেন, “আমি নতুন এই জেলায় এসেছি। পড়ুয়াদের রান্নার কাজে লাগানো উচিত নয়। খোঁজ নিয়ে দেখছি। এরকম ঘটলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত মোট নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ১৪৯ জন। স্কুলটিতে সাতজন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.