দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ১২ দিনের লড়াই শেষ। জীবনযুদ্ধে হার মানল সোনারপুরের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অঙ্কিতা দেবনাথ। আজ সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ছুরিকাহত ওই ছাত্রীর। প্রেমে প্রত্যাখ্যানের জেরে ওই ছাত্রীর উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারির দাবিতে সেই সময়ে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর তদন্তে নেমে অভিযুক্ত সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করে সোনারপুর থানার পুলিশ। রবিবার অঙ্কিতার মৃত্যুর পর এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনা ৭ তারিখের। চম্পাহাটির বাসিন্দা, বাসন্তী হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অঙ্কিতা ওইদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে তার উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় জনা কয়েক যুবক। এলোপাথাড়ি কোপানো হয় অঙ্কিতাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় সে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে, চম্পট দেয় হামলাকারীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে ওই অবস্থায় দেখে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন যে অঙ্কিতার মুখমণ্ডল একেবারে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল, যা দেখে আঁতকে উঠেছিলেন সকলে। দু’দিন পরে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে, তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই অঙ্কিতার চিকিৎসা চলছিল। পরিবারের দাবি, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে অঙ্কিতার উপর হামলা চালিয়েছিল অভিযুক্ত। আজ সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সপ্তম শ্রেণির এই ছাত্রী।
তবে ঘটনা পর ১২দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনও প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ফলে তদন্ত তেমন গতি পায়নি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে অঙ্কিতার পরিবার থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ সঠিক পথে এগোচ্ছে না। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে গা ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে। অভিযোগ, অঙ্কিতার উপর হামলার ঘটনায় মূল পান্ডা নিজেও ছাত্র। সম্ভবত নবম শ্রেণিতে পড়ে সে। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল। আজ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তদন্তকারীদের দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান না পাওয়ার ফলে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে বাধার মুখে পড়েছেন তাঁরা। এদিন অভিযুক্তের গ্রেপ্তারির পরও সুবিচার নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না পরিবার ও প্রতিবেশীরা। যতক্ষণ না তার কঠোর শাস্তি হয়, ততক্ষণ স্বস্তির ফেলা যাচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। অঙ্কিতার মৃত্যুর শোকের পাশাপাশি তাই পুলিশের ভূমিকায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভও বাড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.