সুব্রত বিশ্বাস: ক্লাস ফাইভের ছাত্র। ইউনিট টেস্টে ইংরেজিতে খারাপ ফল। আগের ইউনিট টেস্টেও ফল ভাল ছিল না। এজন্য গার্জিয়ান কল করে স্কুল। আর সেই আতঙ্কে বাড়ি ছেড়েছিল মালদহ কালিয়াচক হাই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র অরিজিৎ ঘোষ। বাড়ি থেকে পালিয়ে অনেকটা দূর চলেও এসেছিল। শেষমেশ হাওড়ায় এসে পুলিশের হাতে আটক হল পড়ুয়া।
[ এই প্রথম কলকাতায় পঞ্চায়েত ভোট, সংঘর্ষ এড়াতে বিশেষ সতর্ক লালবাজার ]
ইউনিট টেস্টের খারাপ ফলেই এহেন আতঙ্ক বেশ অবাক করার মতোই। কোনও কারণে ইউনিট টেস্টে প্রত্যাশামতো পারফর্ম করতে পারছিল না ওই পড়ুয়া। এর ফল যে কী হতে পারে, তা সে বেশ ভালই জানে। কপালে জুটতে পারে মারধর। এদিকে সোমবারই অরিজিতের বাবা বিশ্বজিৎ ঘোষকে স্কুলে হাজির করানোর কথা ছিল। কিন্তু সেই সাহস হয়নি অরিজিতের। বললেই বেদম মারধর জুটতে পারে, এই আতঙ্কেই এদিন ভোরে বাড়ি ছাড়ে সে। পকেটে মোটে ৪০০ টাকা, তাও আগুপিছু ভেবে দেখেনি পড়ুয়া। হাওড়াগামী ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস মালদহ ছাড়ার সময় লাফিয়ে ট্রেনে ওঠে পড়ে।
[ তৃণমূল নেতা খুনে শম্ভুনাথ কাউয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, জরিমানা ৫ হাজার টাকা ]
এদিকে বছর এগারোর এক ছেলেকে একেবারে একা ট্রেনে যেতে দেখে সন্দেহ হয় মালদহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী অস্মিতা সরকারের। তিনি ওই ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেন, একা একা কোথায় যাচ্ছ? অস্মিতার প্রশ্নের মুখে পড়েও ঘাবড়ানোর লক্ষণ দেখা যায়নি তার। স্মার্টলি উত্তর দেয়, কলকাতায় তার মামার বাড়ি, সেখানেই যাচ্ছে। অরিজিৎ মুখে একথা বললেও উত্তরের সমর্থনে তেমন কোনও লক্ষণ দেখতে পাননি অস্মিতা। তিনি বুঝতে পারেন ছেলেটি মিথ্যে বলছে। আসলে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। অরিজিৎও বোধহয় বুঝতে পেরেছিল, তার মিথ্যে কথা ধরে ফেলেছেন অস্মিতা। পালাবার আর তেমন কোনও উপায় নেই। তখন সে অস্মিতাকেই নিজের পক্ষে আনার চেষ্টা করে। ঘণ্টাখানেক পর মালদহের পুনাটুলির বাসিন্দা অস্মিতাকে একেবারে সত্যি কথাটা বলে দেয় অরিজিৎ। পরীক্ষায় খারাপ ফল, গার্জিয়ান কল ও সেই ভয়ে বাড়ি থেকে পালানোর ঘটনা বিস্তারিত বলে। অস্মিতা কোনওরকম ঝুঁকি না দিয়েই হাওড়া আসার পরই আরপিএফকে পুরো ঘটনা জানান। এরপরই আরপিএফ অরিজিৎকে হেফাজতে নেয়। তাকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অরিজিতের বাবা বিশ্বজিৎ ঘোষের গ্যারাজ রয়েছে। আরপিএফ বাড়ি পালানোর ঘটনার কথা তাঁকে জানিয়েছে।
[ দুর্ঘটনার জেরে ইকো পার্কের সমস্ত রাইড বন্ধের নির্দেশ পুরমন্ত্রীর ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.