সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক ফার্মাসি পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু জঙ্গিপুরে। কলেজের হস্টেলের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। খুন নাকি আত্মহত্যা তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। কলেজের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছে পরিবার। তাঁদের দাবি, দীর্ঘক্ষণ ধরে পড়ুয়াকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও কর্তৃপক্ষের হেলদোল ছিল না। শেষে হস্টেলে মৃতের বাবা পৌঁছলে জানতে পারেন ছেলের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছে। পাশাপাশি, এফআইআর না নেওয়ার অভিযোগ উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত পড়ুয়ার নাম তহীদ করিম। তহীদ মালদহ যদুপুরের বাসিন্দা। তিনি জঙ্গিপুরের জাকির হোসেন ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাসি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। সেই কলেজের হস্টেলেই থাকতেন তিনি।
জানা গিয়েছে, ওই পড়ুয়া প্রতিদিনই মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। কিন্তু প্রায় ১২-১৩ ঘণ্টা ধরে তাঁরা ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন বলে জানিয়েছেন বাবা-মা। শেষে মৃতের বাবা কলেজের হস্টেলে পৌঁছলে জানতে পারেন তহীদ আত্মহত্যা করছেন। এখানেই পরিবারের অভিযোগ, ওই পড়ুয়া দীর্ঘক্ষণ নিখোঁজ থাকার পরও কেন তাঁকে উদ্ধার করা যায়নি। বাড়ির লোক যেতেই কী করে দেহ উদ্ধার হল। এছাড়াও তাঁরা না গেলে দেহ পেতেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা করছেন। পরে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করলেও অভিযোগ নিতে চায়নি বলে অভিযোগ করছে পরিবার।
মৃতের মামা বলেন, “ভাগ্নে এখানে থেকেই পড়াশোনা করত। ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে হস্টেলে এসে শুনি আত্মহত্যা করেছে। হস্টেলের ঘরে একটা ছেলের পরে রয়েছে, তা কেউ যানে না। ওঁর বাবা এসে খোঁজাখুজির পর দেহ উদ্ধার হচ্ছে। এটা গাফলতি ছাড়া আরকি?” তবে কী কারণে এই মৃত্যু তা নিয়ে তিনিও অন্ধকারে। বলেন, “কীভাবে এই কাণ্ড ঘটল তা বলতে পারব না। কারোর সঙ্গে ওর শত্রুতা ছিল না বলেই জানি।”
মৃতের বাবা বলেন, ” আমি ওঁর মায়ের থেকে ফোন পেয়ে জানতে পারি ছেলেকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি হস্টেলে এসে দেখা করতে চাইলে, জানতে পারি ও আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত চাই। ছেলে নিজে কিছু করলে মেনে নেব। কেউ খুন করলে দোষীর শাস্তি চাই।”
মৃতের কাকা পরিকল্পনা করে খুনের অভিযোগ তুলে বলেন, “ভাইপো ওই কলেজে পড়ত।দীর্ঘক্ষণ ওঁর খোঁজ না পাওয়ার পর হস্টেলে ওর বাবা গেলে দেখে ঘরের মেঝেয় দেহ পড়ে রয়েছে। বলা হচ্ছে আত্মহত্যা করেছে। তা মানি না।” তিনি আরও বলেন, ” বলা হচ্ছে একটা গামছা পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তা সম্ভব নয়। ওই ঘরের যা উচ্চতা সেখানে হাত যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা খোঁজাখুঁজির পর দেহ উদ্ধার হয়েছে। তার আগে পর্যন্ত খোঁজ ছিল না।” পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি বলেও দাবি করেছেন তিনি। এই ঘটনার পর কলেজে পড়ুয়াদের নিরপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.