Advertisement
Advertisement

Breaking News

গুরুংকে উপেক্ষা, পাহাড়ে বনধ ভেঙে পথে আমজনতা

সরকারি অফিস খোলা, মুখ লুকিয়ে মোর্চা নেতৃত্ব৷

Strike was flop show in North Bengal for Morcha
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 28, 2016 3:37 pm
  • Updated:September 28, 2016 3:37 pm  

ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: বিমল গুরুংয়ের ডাকা বনধের বিরোধিতায় বুধবার দলে দলে সাধারণ মানুষ নামলেন পাহাড়ের রাস্তায়৷ তাঁদের কেউ শামিল হলেন শান্তি ও উন্নয়নের পক্ষে তৃণমূলের মিছিলে৷ কেউ আবার পৌঁছলেন সরকারি অফিস-কাছারি-আদালতে৷ বুঝিয়ে দিলেন বনধ নয়, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে যে উন্নয়নের ডাক দিয়েছেন, তাঁরা তারই পক্ষে৷

পুজোর মুখে ভরা পর্যটন মরশুমে এই বনধ যে পাহাড়বাসী মেনে নিতে পারেননি, তা দার্জিলিং থেকে কালিম্পং, কার্শিয়াং থেকে মিরিক – সর্বত্রই স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বতস্ফূর্ত পথে নামাই স্পষ্ট করে দিয়েছে৷ অন্যদিকে, বিমল গুরুং-রোশন গিরি-সহ মোর্চার প্রথম সারির কোনও নেতাকেই এদিন দুপুর পর্যন্ত প্রকাশ্যে দেখা যায়নি৷ দু’একটি জায়গায় মোর্চার সমর্থনে মিছিল হয়েছে, পাল্টা শান্তি মিছিল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, “এদিন সকাল সাড়ে দশটায় জেলা প্রশাসনিক ভবনে কর্মীদের উপস্থিতির হার ছিল ৯৬ শতাংশ৷”

Advertisement

পাহাড়ের অধিকাংশ স্কুল-ই খোলা৷ সেন্ট পলস, নর্থ পয়েণ্ট-সহ বিভিন্ন নামী আবাসিক স্কুলে ক্লাস হয়েছে পুরোদমে৷ খোলা রয়েছে পোস্ট অফিস থেকে ব্যাঙ্ক, সরকারি অফিস৷ জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাড়তি বাস চালানো হচ্ছে৷ পথে নেমেছে বেসরকারি গাড়িও৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পাহাড়ের তিন মহকুমায় রয়েছেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী৷ কালিম্পংয়ে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব, কার্শিয়াংয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও দার্জিলিংয়ে রয়েছেন আদিবাসী উন্নয়নমন্ত্রী জেমস কুজুর৷ রাস্তায় নেমে তাঁরা দোকানপাট, বাজার, হোটেল খোলা রাখতে আবেদন জানান৷ সাড়া দিয়েছেন পাহাড়ের মানুষ৷

বনধের বিরোধিতায় সকাল থেকেই পাহাড়ের আম-জনতা পথে নামায় চাপে পড়ে যাওয়া মোর্চা বিভিন্ন এলাকায় অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করে৷ পেডংয়ে বনধ সমর্থকরা তৃণমূলের পতাকা লাগানো দু’টি গাড়িতে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ৷ মইলিতে ভাঙা হয় একটি গাড়ি৷ পর্যটকদের গাড়ি আটকেও হেনস্তার চেষ্টা করা হয়েছে৷ বনধ বেআইনি বলে হাই কোর্ট রায় দেওয়ার পরও  মোর্চার গা-জোয়ারিতে ক্ষুব্ধ পাহাড়ের সাধারণ মানুষ থেকে পর্যটকরা৷ জোর করে বনধের চেষ্টার অভিযোগে জিটিএ-র পাঁচ সভাসদ-সহ দুপুর পর্যন্ত আড়াইশোরও  বেশি মোর্চা নেতা, কর্মী-সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ৷

কালিম্পংয়ের ডম্বর চকে মোর্চা সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাঁধে৷ আটক করা হয় মোর্চার শাখা সভাপতি তথা জিটিএ সভাসদ আর বি ভুজেলকে৷ গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টায় পুলিশের হাতে কার্শিয়াং থেকে আটক জিটিএ সভাসদ অনিত থাপা, যোগেন্দ্র রাই৷ মিরিকে গ্রেফতার হয়েছেন জিটিএ সভাসদ ফুবি রাই, অরুণ ঘিসিং৷ মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং কালিম্পংয়ে থাকলেও রাস্তায় নামেননি৷ দার্জিলিংয়ের চকবাজারে বিদ্যার্থী মোর্চার অনশনমঞ্চে দলের কিছু কর্মী-সমর্থককে দেখা গেলেও ছিলেন না প্রথম সারির নেতারা৷

নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নামা পর্যটকদের পাহাড়ে পৌঁছনোর গাড়ির ব্যবস্থা করতে সহায়তা-কেন্দ্র খুলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা৷ বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামা দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও যাতে নির্বিঘ্নে পাহাড়ে পৌঁছতে পারেন, প্রশাসনের তরফে তারও ব্যবস্থা করা হয়৷ দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং – তিন জায়গাতেই বনধ বিরোধী মিছিল করে তৃণমূল৷ এদিকে নিরাপত্তা আঁটসাঁট করতে পাহাড়ে পুলিশের সঙ্গে মোতায়েন করা হয়ে আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদেরও৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement