সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফেজটুপি আর লুঙ্গি পরে ট্রেনে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ। এক বিজেপি কর্মী ও তার পাঁচ সঙ্গীকে আটক করল মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। ট্রেনে পাথর ছোঁড়ার সময় তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। সংশোধিক নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় দেশজুড়ে অশান্তির ঘটনায় কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিক্ষোভকারীদের পোশাক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। বলেছিলেন, ”পোশাক দেখেই বোঝা যায়, কারা হিংসা ছড়াচ্ছে।’ কিন্তু এই গ্রেপ্তারির ঘটনায় মুখ পুড়ল বিজেপিরই। যদিও অভিযুক্তদের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই মন্তব্য করেছে গেরুয়া শিবির।
দেশজুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে। বাংলাতেও এর আঁচ পড়েছে। CAA’র প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ একাধিক জেলায় বিক্ষোভের আগুন জ্বলেছে। বিক্ষোভকারীরা জ্বালিয়ে-ভাঙচুর করে নষ্ট করেছে বহুমূল্যের সরকারি সম্পত্তি। রাজ্যে অশান্তির ঘটনায় মোট ৯৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাই কোর্টেও জমা দিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে আলোড়ণ ফেলে দিয়েছে একটি খবর, লুঙ্গি ও ফেজটুপি পরে ট্রেনে পাথর ছোঁড়ার ঘটনায় আটক বিজেপি কর্মী। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, রাধামাধবতলার বাসিন্দারা ছ’জনকে শিয়ালদহ-লালগোলা লাইনের ট্রেনে পাথর ছোঁড়ার সময় হাতেনাতে ধরেছে। আটকদের মধ্যে অভিষেক সরকার (২১) একজন বিজেপি কর্মী বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সুপার মুকেশ জানিয়েছেন, ‘ধৃতরা জানিয়েছে, তারা লুঙ্গি ও ফেজটুপি পরে ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও তৈরি করছিল। কিন্তু সেই ইউটিউব চ্যানেলের কোনও অস্তিত্বই তারা দেখাতে পারেনি।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিষেকের বাড়ি শ্রীশনগর এলাকায়। তাকে একাধিকবার বিজেপির কর্মসূচি-মিছিলে দেখা গিয়েছে। এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, ‘রেললাইনের ধারে ওদের পোশাক পালটাতে দেখেই সন্দেহ হয়। অভিষেককে চিনি বলেই ওকে আমরা জিজ্ঞাসা করি, তারপর পুলিশে খবর দিই।’ বহরমপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে মোট সাতজন ছিল। একজন পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় জেলা বিজেপি সভাপতি গৌরীশংকর ঘোষ অবশ্য অভিষেককে নিজেদের দলের কর্মী হিসাবে অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাধামাধবতলার ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানা নেই। অভিষেক বিজেপির কর্মী নয়।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই রানি রাসমনি অ্যাভিনিউয়ের প্রতিবাদী সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপির ফাঁদে পা দেবেন না। ওরা হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছে। ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট পেয়েছি, বিজেপি তাদের কর্মীদের জন্য ফেজটুপি কিনছে, যাতে অশান্তি করার সময় ছবি তুলে মুসলিম সম্প্রদায়কে বদনাম করতে পারে। যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা-দ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভুয়ো ভিডিও তৈরি করছে।’ মমতার এই মন্তব্যকে অনেকটাই মান্যতা দিচ্ছে রাধামাধবতলার ঘটনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.