রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: কথায় বলে, সন্তান খারাপ হলেও, মা নাকি খারাপ হতে পারেন না৷ প্রত্যেক সন্তানই তাঁর চোখে সমান৷ যেকোনও বিপদ থেকে সন্তানকে আগলে রাখাই নাকি তাঁর প্রথম লক্ষ্য৷ কিন্তু ঘটল তার উলটোটাই৷ মায়ের বিরুদ্ধেই উঠল ছেলেকে খুনের অভিযোগ৷ এই ঘটনায় রীতিমতো উত্তেজনা ছড়াল আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার আশুতোষ পল্লিতে৷
ওই এলাকারই বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দে, স্থানীয় একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবে চাকরি করেন৷ এক সন্তান রেখেই মারা যান তাঁর প্রথম স্ত্রী৷ তাই দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তিনি৷ কাজের চাপে সন্তানকে সময় দিতে পারেন না, কিশোর সন্তানের দেখভাল করতেন সৎ মা৷ শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ প্রতিবেশীরা দেখেন, ওই কিশোর অচৈতন্য হয়ে পড়েছে৷ ছেলের চোখে-মুখে জল দিয়ে জ্ঞান ফেরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তার সৎ মা৷ ওই কিশোরের কী হয়েছে, বুঝতে পারেন না কেউই৷ বাড়িতে এসে তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করা হয়৷ স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরকে৷ যদিও ততক্ষণে সব শেষ৷ চিকিৎসকরা ওই কিশোরকে মৃত বলেই জানান৷
নিহত কিশোর শুভদীপ দে, ফালাকাটা হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র৷ পড়াশোনা থেকে স্বভাব সবেতেই পরিজন এবং প্রতিবেশীদের কাছে প্রশংসার পাত্র ছিল শুভদীপ৷ তার মৃত্যুতে পাথর গোটা আশুতোষ পল্লির বাসিন্দারা৷ প্রতিবেশীদের অভিযোগ, প্রতিদিন সৎ মা মারধর করত কিশোরকে৷ খেতে না দেওয়ার মতো ঘটনাও লেগেই থাকত৷ এছাড়াও ওই কিশোরকে বহুবারই বাড়ি থেকে রাতের অন্ধকারে তার সৎ মা বের করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ৷ প্রতিবেশীদের অভিযোগ, শুক্রবার লোহার রড দিয়ে শুভদীপকে তার সৎ মা মারধর করে৷ তাতেই প্রাণ হারিয়েছে ওই কিশোর৷ এই অভিযোগ তুলে ওই কিশোরের সৎ মাকে মারধরও করেন প্রতিবেশীরা৷ যদিও নিহত কিশোরের মা এই অভিযোগ মানতে নারাজ৷ তাঁর দাবি, শারীরিক অসুস্থতা থেকেই দুর্বল হয়ে পড়ছিল শুভদীপ৷ শুক্রবার সকাল থেকেই বমি করছিল সে৷ তার জেরেই মৃত্যু হয়েছে শুভদীপের৷
এই ঘটনায় প্রতিবেশীরাই ফালাকাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন৷ পুলিশ নিহত ওই কিশোরের দেহ আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে৷ ছাত্রের সৎ মা এবং বাবাকে আটক করে জেরা করছে পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.