রাজা দাস, বালুরঘাট: বিদ্যাসাগরের পূর্ণাবয়ব মূর্তি পড়ে রয়েছে একটি দোকানের সামনে৷ আর তা দিনের পর দিন অবহেলিত হচ্ছে, এই অভিযোগ ঘিরে সরগরম বালুরঘাট। কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় তোলপাড়ের মাঝে উঠে এল এই ইস্যু। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বালুরঘাটের এই মূর্তি নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি সেই মূর্তির যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি তুলছেন সকলে।
বালুরঘাটের চকভৃগু এলাকার প্রধান সড়কের ধারে একটি বহুতলের নিচে উন্মুক্ত অবস্থায় রয়েছে বিদ্যাসাগরের পূর্ণাবয়ব মূর্তিটি। বছর বারো আগে একটি বইয়ের দোকানের মালিক তাঁর দোকানের সামনে মূর্তি তৈরি করিয়েছিলেন৷ পরবর্তীতে সেখানে একটি হার্ডওয়্যারের দোকান করা হয়। কিন্তু মূর্তি তৈরির বছর দুই পর থেকেই অবহেলায়,অযত্নে পড়ে রয়েছে। ‘বর্ণপরিচয়’ হাতে বিদ্যাসাগর এখনও একইভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে, কিন্তু তাঁর আশপাশ অনেকটা বদলেছে৷ এখন দিনভর হার্ডওয়্যারের দোকানের সামগ্রীর আড়ালে চাপা পড়ে থাকেন বিদ্যাসাগর। রাতে ওই দোকান বন্ধ হওয়ার পর জনসমক্ষে আসে মূর্তিটি৷
জন্মদিন ও প্রয়াণ দিবস তো বটেই, বছরের কোনও বিশেষ দিনেও ওই মূর্তির গলায় মালা পরানো বা অন্য কোনও শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয় না৷ তা এলাকাবাসীর নজরে এলেও সেভাবে সক্রিয়তা দেখাননি কেউ। কিন্তু কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজে নিন্দনীয় ঘটনার পরেই বালুরঘাটের মূর্তিটি নিয়ে অতিসক্রিয়তা দেখা যায়৷ স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘ব্যক্তিগত জায়গা ও উদ্যোগে এখানে মূর্তিটি বসানো হয়েছিল বলে কেউ যেতেন না। কিন্তু কলকাতার ঘটনার পর মনীষীদের মূর্তির গুরুত্ব যথাযথভাবে তুলে ধরছেন সকলে। তাই এখানকার মূর্তিটির রক্ষণাবেক্ষণ ও যত্নের দাবি উঠছে৷
হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী সমীর রায়ের কথায়, ‘স্থানীয় এক বই ব্যবসায়ী এখানে মূর্তিটি বসিয়েছিলেন। তখনই আপত্তি জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেসময় তিনি শোনেননি। পরে বইয়ের দোকান বন্ধ হয়ে গেলেও তিনি মূর্তি সরাননি। স্বাভাবিকভাবেই দোকানের আসবাবপত্র রাখতে সমস্যা হচ্ছে। উপায় না থাকায়, মূর্তিকে আড়াল করেই রাখতে হচ্ছে সামগ্রী৷’ চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পার্থ দাস জানিয়েছেন, মূর্তিটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি হলেও, পরবর্তী সময়ে মূর্তিটি পঞ্চায়েতের দায়িত্বে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল তাঁর কাছে৷ কিন্তু ওই বইবিক্রেতা মূর্তিটি দিতে অস্বীকার করেছিলেন বলে অভিযোগ। এবার এলাকাবাসীর সম্মিলিত দাবিতে পঞ্চায়েত মূর্তিটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেবে বলে আশ্বাস মিলেছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.