Advertisement
Advertisement

বঙ্গ বিজেপিকে ‘অল আউট’ লড়াইয়ের গেমপ্ল্যান তৈরির নির্দেশ

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঠেকাতে বঙ্গ বিজেপিকে কড়া বার্তা দিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব৷ দলাদলি ছেড়ে মাঠে নেমে কাজ করার নির্দেশ দিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় থেকে শিবপ্রকাশরা৷ দেবতা ও দৈত্যকুলের উদাহরণ দিয়ে রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র কড়া বার্তা, ঝগড়া না করে একে অপরকে সহযোগিতা করুন৷ পার্টি অফিসে বসে বৈঠক না করে বুথে বুথে যেতে হবে৷ পাশাপাশি রাজ্য কমিটির রুদ্ধদ্বার […]

State Working committee meeting in Siliguri, where various policies of BJP West Bengal have been analysed, incorporated necessary changes too with few important resolutions.
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 19, 2016 2:54 pm
  • Updated:October 17, 2023 8:42 pm  

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঠেকাতে বঙ্গ বিজেপিকে কড়া বার্তা দিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব৷ দলাদলি ছেড়ে মাঠে নেমে কাজ করার নির্দেশ দিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় থেকে শিবপ্রকাশরা৷ দেবতা ও দৈত্যকুলের উদাহরণ দিয়ে রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র কড়া বার্তা, ঝগড়া না করে একে অপরকে সহযোগিতা করুন৷ পার্টি অফিসে বসে বৈঠক না করে বুথে বুথে যেতে হবে৷ পাশাপাশি রাজ্য কমিটির রুদ্ধদ্বার বৈঠকে আর এক কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশের বক্তব্য, কোনও টিম ভাগাভাগি চলবে না৷ নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বন্ধ করতে হবে৷ একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ব্যক্তিগত স্বার্থ নিয়ে অনেকে ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছেন৷ এসব আগামিদিনে চলবে না৷

একদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রোধে কড়া বার্তা, অন্যদিকে দলে তরুণ প্রজন্মকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলে ২০১৯ কে সামনে রেখে বুথে বুথে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ‘অল আউট’ লড়াইয়ে নেমে পড়ার জন্য টিম বেঙ্গল কে এখন থেকেই গেমপ্ল্যান তৈরি করার নির্দেশ দিলেন শীর্ষ নেতারা৷ সেই মতো তরুণদের প্রাধান্য দিয়েই ২৫টি জেলার পর্যবেক্ষক পদে রদবদল করা হয়েছে বৈঠকের শেষদিনে৷ একইসঙ্গে পরিশ্রমী না হলে ও যোগ্যতা প্রমাণ করতে না পারলে আগামিদিনে দলের পদে যে আর জায়গা হবে না এই বার্তা দিয়েও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পরবর্তী ক্ষেত্রে সাংগঠনিক রদবদলের ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছে৷

Advertisement

শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত বিজেপির দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক শেষ হয়েছে শনিবার৷ বৈঠকে মূলত সংগঠন নিয়েই বলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশরা৷ প্রথমেই বলতে ওঠেন কৈলাস৷ কর্মীদের হতাশা কাটাতে গীতা পড়ার দাওয়াই দেন তিনি৷ বলেন, ফলের কথা না ভেবে কর্ম করতে হবে৷ বুথে বুথে যেতে হবে৷ বুথকে শক্ত না করলে কিছুতেই সাফল্য আসবে না৷ মোদি সরকারের সাফল্য বুথ পর্যন্ত কেন নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না বলে উপস্থিত রাজ্য কমিটির সদস্যদের উদ্দেশে প্রশ্ন তোলেন তিনি৷ পার্টির নিয়মের কেউ ঊর্ধ্বে নয়৷ পদে যিনি থাকবেন তিনি জুনিয়র হলেও তাঁকে মর্যাদা দিতে হবে৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে শুরু করে পার্টির নিয়ম মেনে চলা নিয়ে কৈলাস, শিবপ্রকাশরা কড়া বার্তা দিয়ে বর্তমানে দলের দুই শিবিরকেই সতর্ক করতে চেয়েছেন৷ জেলা ও লোকসভা ভিত্তিক এদিন দলের সংগঠনকে পাঁচটি জোনে ভাগ করে পাঁচ রাজ্য নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবশ্রী চৌধুরি, বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরি, সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ সেলগুলিরও নতুন কমিটি করা হয়েছে৷ সেখানেও তরুণ প্রজন্মকে আনা হয়েছে৷ সাংস্কৃতিক সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ আবার পাঁচজন করে নেতাকে বুথের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হচেছ৷ প্রাক্তন ও বর্তমান রাজ্য সভাপতি যথাক্রমে রাহুল সিনহা ও দিলীপ ঘোষকেও বুথের দায়িত্ব নিতে বলেছেন কৈলাস৷ এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৬৫ শতাংশ বুথে কমিটি করতে পেরেছে বিজেপি৷ বুথস্তর চাঙ্গা করতে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছে দল৷ জুলাই মাসে বুথ পর্যন্ত চলবে কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্য প্রচার৷ দু’মাস পরেই বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনে নেমে পড়ছে গেরুয়া শিবির৷ সূত্রের খবর, ২০১৯-মিশনকে সামনে রেখে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থা খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসার কথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর৷

রাজ্যে দলের বিস্তারের জন্য বঙ্গ বিজেপি উদার হয়ে পার্টির দরজা খোলা রাখছে অন্য দলের নেতা-কর্মীদের জন্য৷ শিবপ্রকাশ বলেছেন, রাজ্যে সিপিএম সংকুচিত হচ্ছে৷ কংগ্রেসের অবস্থা খারাপ৷ এই শূন্যস্থান দখল করতে হবে বিজেপিকে৷ তাই কংগ্রেস-সিপিএম থেকে কেউ আসতে চাইলে তাঁকে সসম্মানে দলে জায়গা দিতে হবে৷ দরজা খোলা রাখতে হবে৷ প্রয়োজনে তাদের নেতৃত্বস্তরেও আনতে হবে৷ অর্থাৎ আগামিদিনে সিপিএম ও কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসানোর ছক কষতে এখন থেকেই নেমে পড়তে চাইছে বিজেপি৷ লক্ষ্য সেই ২০১৯৷ রাজনৈতিক প্রস্তাবে তৃণমূল ও সিপিএম দু’দলই সমান প্রতিপক্ষ বলে উল্লেখ করা হলেও, আপাতত রাজ্যে বাম ও কংগ্রেসে ভাঙন ধরানোটাও বিজেপির অন্যতম লক্ষ্য৷

বৈঠকে দলের যুব থেকে মহিলা মোর্চার কাজের খতিয়ান শোনেন শিবপ্রকাশ৷ দলীয় সূত্রে খবর, বিস্তারিত বিবরণ দিতে গিয়ে মৃদু ধমক খান এক যুব নেতা৷ আবার মহিলা মোর্চা নিয়ে রিপোর্টিং করার সময় দলের এক রাজ্য নেত্রী নির্দিষ্ট বিষয়ের বাইরে গিয়ে বক্তব্য রাখায় অবাক হন অনেকে৷ বহু মোর্চার কমিটি এখনও গঠন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শীর্ষ নেতারা৷ এদিন, বিজেপির বৈঠকের শেষদিনে মঞ্চে হাজির হন মোর্চা নেতা রোশন গিরি-সহ কয়েকজন৷ দলের পরবর্তী রাজ্য কমিটির বৈঠক ১ ও ২ অক্টোবর৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement