Advertisement
Advertisement

দিঘার কাছে নয়া বন্দর গড়বে রাজ্য

“শুধু এখানেই নয়, একটা বড় অংশকে কাজে লাগিয়ে আরও কিছু ছোট বন্দর তৈরি হবে৷ একইসঙ্গে জলপথ পরিবহনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নদীকেও কাজে লাগানো হবে৷”

State To Make New Port Near Digha
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 18, 2016 9:14 am
  • Updated:June 22, 2022 5:14 pm  

স্টাফ রিপোর্টার: রসুলপুরে সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ক্ষেত্রে আগেই দুর্নীতিগ্রস্ত চুক্তি বাতিল করেছিল তৃণমূল সরকার৷ দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে এবার দিঘার কাছে শঙ্করপুরে অর্ধেক খরচে প্রায় পাঁচগুণ ছোট এলাকার মধ্যে সেই সমুদ্রবন্দর তৈরির সিদ্ধান্ত নিল সরকার৷ রসুলপুরের ঘনজনবসতির বদলে একটি জনপদহীন এলাকায় হলদিয়ার থেকেও তিনগুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন এই বন্দর নির্মাণ করা হবে৷ একাধিক বার্থযুক্ত এই বন্দর উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে জলপথ পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে জানানো হয়েছে৷
শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বাম আমলের বিরু‌দ্ধে অভিযোগ তুলে বলা হয়েছে, রসুলপুরে বন্দর নির্মাণের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ছিল৷ বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, নতুন টেন্ডারের ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না৷ সেক্ষেত্রে রসুলপুরে যে সংস্থাটি কাজ শুরু করেছিল, শঙ্করপুরে বন্দর নির্মাণের ক্ষেত্রে নতুন করে যে টেন্ডার আহ্বান করা হবে, সেখানেও সংস্থাটি অংশ নিতে পারবে৷ একইসঙ্গে শঙ্করপুর-তাজপুরে বন্দর নির্মাণের ক্ষেত্রে পর্যটনের কোনও ক্ষতি হবে না বলে জানানো হয়েছে৷ অন্য দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে ১৮ একর জমিতে সংশোধনাগার তৈরি করবে সরকার৷ বারুইপুরের ধোপাগাছিতে তৈরি হবে সেই সংশোধনাগার৷
বাম আমলে রসুলপুরে সমুদ্রবন্দর তৈরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ স্রেফ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে একটি সংস্থাকে যে এই বন্দর বানানোর কাজে নিযুক্ত করা হয়েছিল, অভিযোগ তুলে ভোটের মুখে বিরোধীদের চাপে ফেলতে একেবারে তার নথি টেনে বের করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেছিলেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে টেন্ডার ডেকেই হবে বন্দর নির্মাণ৷ শুধু টেন্ডার ডাকাই নয়, জমি জরিপ না করেই সংস্থাটি ঘন-জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ জায়গাজুড়ে সমুদ্রবন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছিল৷ যার ফলে ঘরছাড়া হতে হত অসংখ্য মানুষকে৷ মমতার অভিযোগ, “বাম আমলে এই গোটা প্রক্রিয়াটা হয়ে গিয়েছিল স্রেফ একটা লেটার অফ ইন্টেন্ট দিয়ে৷ আমরা তার প্রতিবাদ জানাই৷ চুক্তি বাতিল করি৷” এ দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর স্ট্যান্ডিং কমিটি ফর ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, “শুধু এখানেই নয়, একটা বড় অংশকে কাজে লাগিয়ে আরও কিছু ছোট বন্দর তৈরি হবে৷ একইসঙ্গে জলপথ পরিবহনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নদীকেও কাজে লাগানো হবে৷”
রসুলপুরে যে সংস্থাটি সমুদ্রবন্দর তৈরির কাজ শুরু করে, তাদের চুক্তি বাতিলের ফলে হাই কোর্টে মামলা করে সংস্থাটি৷ সেই মামলায় জেতার পর তৃণমূল সরকারকেই এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, এই নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় নিয়ে আদালতকে অবহিত করতে হবে৷ এর পরই রসুলপুরের জনবসতিপূর্ণ এলাকার বদলে অন্যত্র এমন বন্দর করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়৷ তারাই তুলনামূলক সুবিধাজনক এমন পরিত্যক্ত জমির খোঁজ দেয় সরকারকে৷ রসুলপুরে বন্দর করতে জাহাজ প্রবেশের জন্য ৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল বানাতে হত৷ যার জন্য ১৫০০ একর জমির প্রয়োজন পড়ত৷ গোটা প্রকল্পটির ব্যয় বরাদ্দ ছিল সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা৷ অন্যদিকে, ৩ কিলোমিটার জায়গায় মাত্র ১৯ কিলোমিটার চ্যানেল বানিয়ে ৪২৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে হবে এই বন্দর৷ তার জন্য সমুদ্রভাঙনের ফলে একটি পরিত্যক্ত এলাকাকে ব্যবহার করা হবে৷ প্রকল্পটিতে মাত্র ১০ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার ও রেলপথ সংযুক্তিকরণের জন্য সরকারের খরচ পড়বে মাত্র ১৫০ কোটি টাকা৷ পলি কেটে পাশের পরিত্যক্ত এলাকাকেও উন্নত করা হবে৷ কয়লা-সহ খনিজ বা তরল পরিবহনের জন্য আলাদা বার্থ তৈরি হবে৷ অমিতবাবুর কথায়, “একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এমন একটি রাজ্য আছে, যাদের ১২টি বন্দর রয়েছে৷ সেক্ষেত্রে আমরা পারব না কেন?” স্পষ্ট গুজরাতের দিকে ইঙ্গিত করেই মন্ত্রী জানিয়েছেন, কুলপি-সহ আরও বিভিন্ন এলাকাকে ঘিরে যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তাতে অন্তত আরও তিনটি সমুদ্রবন্দর বানানো সম্ভব হবে৷

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement