ক্ষীরোদ ভট্টচার্য: উৎকর্ষ পরিষেবাই মানদণ্ড। বস্তুত, এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই নাগরিকদের পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থায় আরও উৎকর্ষ ও পেশাদারিত্ব আনল রাজ্য় সরকার। সতেরোটি পুর এলাকার পানীয় জল সরবরাহ পরীক্ষামূলকভাবে চুক্তি ভিত্তিতে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য কাজ শুরু করা হল। তবে এই জন্য জলকর নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দফতরের শীর্ষকর্তারা।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এই নয়া প্রকল্প সম্পূর্ণ করতে ইতিমধ্যেই টেন্ডার প্রকাশ করেছে। নতুন প্রকল্প অনুযায়ী পানীয় জল উৎপাদন থেকে পরিস্রুত করে পুর এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি পর্যন্ত সরবরাহ করার সব কাজ করবে বেসরকারি সংস্থা। তবে গোটা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। অর্থাৎ কেন্দ্রীয়ভাবে সব কিছুর উপর নজরদারি চালাবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব সুব্রত গুপ্ত জানিয়েছেন, “পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থায় আরও উৎকর্ষ ও পেশাদারিত্ব আনতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হল।” প্রধান সচিবের কথায়, “যেসব সংস্থা এই প্রকল্পে জড়িত থাকবে কাজের অভিজ্ঞতার মূল্যায়নের নিরিখেই তাদের বাছাই করা হবে।” দফতর সূত্রে খবর, অন্তত দশ থেকে পনেরো বছরের জন্য সংস্থাগুলিকে নিয়োগ করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী যে কোনও ধরনের দায় বেসরকারি সংস্থাগুলিকেই বহন করতে হবে। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর পর্যালোচনা করে অর্থ প্রদান করবে।
অটল মিশন ফর রিজুভিনেশন অ্যান্ড আরবান ট্রান্সফর্মেশন (অমরুত) প্রকল্পের আওতায় এই কাজ শুরু হবে বলে জান যায়। প্রধান সচিবের কথায়, ” ‘এসসিএডিএ'(স্কাডা) পানীয় জল উৎপাদন ও সরবরাহের পাশাপাশি কোথাও কোনও পাইপের ফাটল মেরামত বা সংস্কারের কাজও বা প্রয়োজনে নতুন পাইপ বসানোর মতো সব কাজ বেসরকারি পেশাদারি সংস্থার উপরই বর্তাবে। এতদিন এই কাজ রাজ্যে করেছে কেএমডিএ, বা কোনও পুরসভা অথবা নগরোন্নয়ন দফতর করত। এবার পেশাদারি সংস্থার সমষ্টিগত জ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ হবে।
এবার দেখা যাক কোন সতেরো পুরসভায় এই প্রকল্প চালু হবে? পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এই প্রকল্পের জন্য যে পুরসভাগুলিকে বেছে নিয়েছে সেগুলি হল, বহরমপুর, কাটোয়া, ধুলিয়ান, দুর্গাপুর ১ এবং ২ নম্বর, পুরুলিয়া, হাওড়া, বালি, শ্রীরামপুর, কলকাতা লাগোয়া বরানগর, কামারহাটি, দক্ষিণ দমদম, কল্যাণী, টিটাগড়, পানিহাটি এবং মধ্যমগ্রাম পুরসভা। নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, পানীয় জল উৎপাদন ও সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দায়িত্ব যেসব সংস্থার উপর বর্তাবে তাদের কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। চলতি আর্থিক বছরের মধ্যেই এই প্রকল্প শুরু হবে বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর। বস্তুত, পানীয় জল সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে এই প্রথম বেসরকারি কারিগরি দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে শুরু করতে চলেছে রাজ্য। বস্তুত, এই প্রকল্প কার্যকর হলে রাজ্যের অন্য পুরসভাগুলিতেও আরও পেশাদারিভাবে পানীয় জল সরবরাহ সম্ভব বলে মনে করছেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.