স্টাফ রিপোর্টার: চাষিদের টাকা ফেরত দিতে দিনরাত এক করে কাজ করবে প্রশাসন৷ সমস্ত আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিতে চায় রাজ্য৷ তাই তাড়াহুড়ো না করলেও সিঙ্গুরে টাটাদের প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় কৃষকদের প্রাপ্য দিতে অযথা দেরি যাতে না হয় তা দেখা হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউরোপ থেকে কাজের অগ্রগতির খোঁজ নিচ্ছেন৷ মঙ্গলবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সিঙ্গুরে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন৷ তার পর জানান, “যেভাবে কাজ এগোচ্ছে তাতে আমরা খুশি৷ আশা করি দ্রুত কৃষকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে রাজ্য৷ আমরা চাই না এই কাজে কোনও ঢিলেমি থাকুক৷ কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সঙ্গে কথা বললাম৷ জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ছিলেন৷ তাঁরাই তো কাজটা করবেন৷”
জমির মাপজোক শুরু হলেও খুব একটা কাজ এগোনো যাচ্ছে না প্রবল বৃষ্টি ও মানুষ সমান উঁচু ঘাস ও আগাছার জন্য৷ কলকাতা পুরসভার যন্ত্র নিয়ে গিয়েও বিশেষ সুবিধা হচ্ছে না৷ তবুও মঙ্গলবার ল্যান্ড ম্যাপিং চলে৷ বেড়াবেড়িতে পাঁচটি টেবিল পেতে ভূমি দফতরের আধিকারিকরা ফের কৃষকদের আবেদনপত্র নেন৷ এবং আগে যাঁরা ফর্ম জমা দিয়েছেন অথচ কিছু ত্রুটি রয়ে গিয়েছে তা শুধরে দেন৷ মূলত অনিচ্ছুকরাই এখন ভীড় করছেন ফর্ম জমা দিতে৷ তাঁদের জন্য শিবির খোলা হয়েছে৷ আগামী বৃহস্পতিবার এখানকার বিদ্যুতের সাবস্টেশনটি সরিয়ে ফেলা হবে৷ সেই কাজের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে এদিন বিদ্যুৎ দফতরের অফিসাররা মাঠে নামেন৷ প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, এখানকার পরিকাঠামো অন্যত্র কাজে লাগানো হবে৷ এমনটা নয় যে সমস্ত যন্ত্রপাতি নষ্ট হবে৷ সেই কাজ কীভাবে হবে তা খতিয়ে দেখে দফতরের সচিব একটি রিপোর্ট প্রস্তুত করেছেন৷ পাশাপাশি একশো দিনের কাজে যুক্তদেরও প্রকল্প এলাকা সাফাইসহ কিছু কাজে লাগানো হয়েছে৷ আরও স্থানীয় যুবকদের প্রয়োজন বলে খবর৷ সেই প্রক্রিয়া চলছে৷ প্রায় ২০০ একর জমি জরিপের কাজ হয়েছে বলে হুগলি প্রশাসন সূত্রে খবর৷
পার্থবাবু বিকেলে সিঙ্গুর আসেন৷ ছিলেন জেলার বিধায়ক, মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত৷ পার্থবাবু প্রকল্প এলাকার কাজ ঘুরে দেখে জানান, “আমরা রোজ এসে কাজ দেখে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাচিছ৷ কৃষকদের মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই৷ ১১০ জন কৃষক আবেদন করেছেন৷ সবকিছু খতিয়ে না দেখলে জমি নেওয়ার সময় যেমন রামের টাকা শ্যাম নিয়েছে, তেমন হতে পারে৷ তাই দ্রুত কিন্তু সাবধানে সব কাজ করতে হবে৷ কোনও ভুল যেন না হয়৷ যা কিছু হবে, বিডিও অফিস থেকেই হবে৷ তবে ১৪ তারিখ প্রশাসনিক সভা হবে৷ প্রচুর লোক আসবেন৷ ঐতিহাসিক সভা হবে৷” বেড়াবেড়িয়া ও গোপালনগরে আবেদনপত্র জমা নেওয়ার যে শিবির রয়েছে তা চলবে৷ তবে সরকার কি সুদসহ টাকা ফেরত দেবে? পার্থবাবু জানান, “আদালতের নির্দেশ মেনেই চলা হবে৷ এর দায়িত্ব তো প্রশাসনের৷ কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় কোনও রাজনীতি আমরা চাই না৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.