নিজস্ব সংবাদদাতা, তেহট্ট: গোড়া থেকেই জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন৷ চেনা এলাকায় লাগাতার প্রচারে শান দিয়ে সেই আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়েছেন৷ শুক্রবার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়ে মহুয়া মৈত্র শুরু করলেন কাউন্টডাউন৷ নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে তিনি কত ভোটে জয়ী হবেন, তার হিসেব শুরু হল বলে মন্তব্য করলেন মহুয়া মৈত্র৷ তাঁর পাশাপাশি এদিন অতিরিক্ত জেলাশাসকের ঘরে মনোনয়ন পেশ করেছেন রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী রূপালী বিশ্বাসও৷
কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের ভোটযুদ্ধ এবার বেশ আকর্ষণীয় একাধিক ক্ষেত্রে৷ তৃণমূল শিবিরের প্রার্থী হয়েছেন করিমপুরের বিধায়ক, দলের অত্যন্ত সক্রিয় সদস্য এবং সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ স্নেহধন্যা যুব প্রজন্মের প্রতিনিধি মহুয়া মৈত্র৷ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবেকে ময়দানে নামিয়েছেন গেরুয়া শিবির৷ কল্যাণ চৌবেরও জনপ্রিয়তা কম নয়৷ তারউপর প্রার্থী হওয়ার পর সেই জনপ্রিয়তাকে হাতিয়ার করে প্রচারে নেমেছেন প্রাক্তন ফুটবলার৷ খেলার মাঠ থেকে শুরু করে এলাকার বাড়িতে, দোকানে, বাজারে পৌঁছে গিয়েছেন ভোটের আবেদন নিয়ে৷ তাঁকে ঘিরেও জনতার উৎসাহ,উদ্দীপনা কম নেই৷ অনেকেই মনে করছেন, কৃষ্ণনগরবাসীর মন জয়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন কল্যাণ চৌবে৷
তবে এসব নিয়ে একেবারেই মাথা ঘামাতে নারাজ মহুয়া মৈত্র৷ শুক্রবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে কৃষ্ণনগরের নিজের ভাড়া বাড়িতে ডাকা সাংবাদিক বৈঠকে প্রতিপক্ষ আরেক হেভিওয়েট প্রার্থীকে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, হেলায় তা উড়িয়ে দিলেন তৃণমূল প্রার্থী৷ কল্যাণ চৌবে কি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে? এই প্রশ্নের উত্তরে মহুয়ার জবাব, ‘চ্যালেঞ্জ কি না, তা ওনাকেই জিজ্ঞেস করুন৷ আমার জয় নিয়ে কোনও সংশয় নেই৷ আমরা বিজয় উৎসবের অপেক্ষা করছি৷ দ্বিতীয় আর তৃতীয় স্থানে কে থাকবে, সেটাই এখন দেখার৷’ তবে আরেক প্রতিপক্ষ সিপিএম প্রার্থী শান্তনু ঝা’র প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন মহুয়া৷ তাঁর কথায়, ‘শান্তনু ঝা শিক্ষিত, অভিজ্ঞ, প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যক্তি৷ তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে৷’ জয়ী হলে এলাকার কী কী উন্নয়ন করবেন, তার লম্বা তালিকাও দিলেন৷ বাইপাসে রাস্তার সমস্যা মেটানো, শিক্ষার উন্নতি, ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পের উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দিকে নজর দেবেন বলে জানালেন তৃণমূল প্রার্থী৷
এরপর বেলা ১২টার কিছুটা আগে বাড়ি থেকে কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বেরিয়ে যান৷ ঢাকঢোল, ব্যান্ড বাজিয়ে সে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়৷ কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড় থেকে ২ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা হেঁটে তিনি পৌঁছন জেলাশাসকের দপ্তরে৷ সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, বিধায়ক তাপস সাহা, কল্লোল খাঁ, হাসানুজ্জামান, গৌরীশংকর দত্ত-সহ অনেকেই৷ কিন্তু মনোনয়ন পেশে প্রাথমিকভাবে বাধা পান মহুয়া মৈত্র৷ একইসময়ে সেখানে মনোনয়ন পেশ করছিলেন নির্দল প্রার্থী৷ তাতে কিছুটা বিরক্ত হয়ে জেলাশাসকের ঘর থেকে বেরিয়ে যান৷ সামান্য কিছুক্ষণ পরেই দুপুর ১টার আগেই অবশ্য নিজের মনোনয়নপত্র পেশ করেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্তার কাছে৷ ২৯ এপ্রিল, চতুর্থ দফায় কৃষ্ণনগর এবং রানাঘাট কেন্দ্রে ভোট৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.