Advertisement
Advertisement

চোট-অভাবে জেরবার, মধ্যমগ্রামের ‘বিশ্বকাপার’ এখন অটোচালক

প্রশাসনের কাছে চাকরির আবেদন জানাচ্ছেন যুবক।

Star of Homeless Football World Cup, now auto driver in Madhyamgram
Published by: Paramita Paul
  • Posted:December 4, 2022 2:09 pm
  • Updated:December 4, 2022 3:48 pm  

অর্ণব দাস, বারাসত: ১২ বছর আগে ফুটবলের স্বপ্নের দেশ ব্রাজিলে আয়োজন হয়েছিল হোমলেস ফুটবল বিশ্বকাপ। ভারতও সেই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছিল। আর বাংলা থেকে দেশের হয়ে একমাত্র প্রতিনিধি ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের এক যুবক। কিন্তু এখন আর সেই যুবকের খোঁজ কেউ রাখে না। বর্তমানে অটো চালিয়ে সংসার সামলাতে হয় তাঁকে। তবে অভাবও দমাতে পারেনি। ফুটবল পাগল অরিন্দম ঘোষাল আজও তাঁর প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছেন।

মধ্যমগ্রামের বসুনগরে এক কামরার একটি ভাড়াবাড়িতে মাকে নিয়ে থাকেন বছর বত্রিশের অরিন্দম। পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই তাঁর ফুটবলের প্রতি আগ্রহ ছিল মারাত্মক। সেই টানেই গোলরক্ষক হিসেবে খেলা শুরু করেন। প্রতিভার জোরে ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র টিমেও খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপরই আসে সুবর্ণ সুযোগ। ২০১০ সালে পেলের দেশ ব্রাজিলে আয়োজিত হয় হোমলেস ফুটবল ওয়ার্ল্ড কাপ। সেখানে দেশের হয়ে গোলরক্ষক হিসেবে খেলেছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা, আমেরিকা, ফিলিপাইন্স মতো তাবড় তাবড় দেশের বিরুদ্ধে তিন কাঠি সামলেছিল মধ্যমগ্রামের এই যুবক। দেশে ফেরার পর তাঁকে নিয়ে মাতামাতিও কম হয়নি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘বাজি তৈরি করতেন স্বামী’, চাঞ্চল্যকর দাবি ভূপতিনগর বিস্ফোরণে নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রীর]

সেই সাফল্য়ের উপর ভর করে এফসিআই এবং রাজস্থানের ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ হয়েছিল অরিন্দমের। ২০১২ সালে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়ে তাঁর পায়ে চোট লাগে। এরপর থেকে আর কেউ তাঁর খোঁজ রাখেনি। খেলার দুনিয়া থেকে হারিয়ে যান মধ্য়মগ্রামের এই যুবক। ২০১৭ সালে বাবার মৃত্যুর পর সংসারের পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর কাঁধে। তাই বাধ্য হয়েই অটো চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয় এই বিশ্বকাপারকে। এখন মধ্যমগ্রাম চৌমাথা থেকে গঙ্গানগর কাটাখাল রুটে অটো চালিয়ে সংসার চালান অরিন্দম।

অরিন্দম জানাচ্ছেন, “বিশ্বকাপ খেলে আসার পর প্রথম দু’বছর ঠিকঠাকই ছিল। সুনীল ছেত্রী, লিয়েন্ডার পেজদের মতো খেলোয়াড়দের সঙ্গে একই মঞ্চে সংবর্ধিত হয়েছিলাম। অতিথি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও। কিন্তু ২০১২ সালে টুর্নামেন্ট খেলার সময় পায়ের মালাইচাকি ভেঙে যায়। কিন্তু মনের জেদ এবং অদম্য শক্তির ওপর ভর করে প্রায় আট মাস পর ফের মাঠে নামি। কিন্তু পায়ের সমস্যা থেকেই যায়। প্রশাসনের থেকে যেভাবে সহযোগিতা আশা করেছিলাম তা পাইনি। তাই, পেটের টানেই আজ আমাকে অটো নিয়ে পথে নামতে হয়েছে।” প্রশাসনের কাছে একটি চাকরির ব্যবস্থা করার অনুরোধও করেছেন তিনি।

 

 

[আরও পড়ুন: ‘১২ বছর পর মনে হল মানুষগুলো কিছুই পাননি’, অভিষেকের জনসংযোগ নিয়ে তোপ দিলীপের]

তাঁর মা টুলু ঘোষাল জানান, “ছেলের পাশে সেভাবে কেউই দাঁড়ায়নি। পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ একমাত্র ওকে একটি অটোর ব্যবস্থা করে দেওয়ায় কোনও রকমে সংসার চলছে আমাদের। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, আমার ছেলের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক।” মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। সংবাদ মাধ্যমের থেকেই প্রথম শুনলাম। কীভাবে প্রতিভাবান এই ফুটবলারের পাশে দাঁড়ানো যায় সেবিষয়ে আমরা চেষ্টা করব।”

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement