উদ্ধার হওয়া ডিজিটাল রেশন কার্ড, ছবি: পরেশ মাইতি।
দেবব্রত দাস, খাতড়া: এবার ডিজিটাল রেশন কার্ডের গুচ্ছ উদ্ধার হল পঞ্চায়েত কার্যালয় লাগোয়া জঙ্গল থেকে। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাঁকুড়ার খাতড়া থানার সুপুর গ্রামে। প্রায় শ’খানেক ডিজিটাল রেশন কার্ড কীভাবে জঙ্গলের মধ্যে গেল বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দায় এড়াতে মুখ খুলেছেন সুপুরের বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান হারাধন মুর্মু। তাঁর দাবি, তিনি মাসখানেক হল দায়িত্ব পেয়েছেন। উদ্ধার হওয়া রেশনকার্ডগুলি এই সময়কার নয়।
হারাধনবাবু বলেন, ‘দায়িত্ব বেশি দিন পাইনি। গত একমাসে এই পঞ্চায়েত থেকে কোনও রেশন কার্ড বিলি হয়নি। তাই উদ্ধার হওয়া ডিজিটাল রেশন কার্ড সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানি না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, রেশন কার্ড গুলি ২০১৬-র প্রথম দফার। এগুলি আগের কার্ড। আমার সময়কার নয়।’ খাতড়ার বিডিও সঞ্জয় সেনাপতি বলেন, “বেশ কিছু ডিজিটাল রেশন কার্ড সুপুর এলাকায় পাওয়া গিয়েছে। এই খবর খাতড়া থানা থেকে আমাকে জানানো হয়েছিল। থানার পক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া ডিজিটাল রেশন কার্ডগুলি আমাদের কাছে জমা করা হয়েছে। ওই রেশন কার্ডগুলি কীভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
মহাকুমাশাসক রাজু মিশ্র বলেছেন, “ পঞ্চায়েত অফিসের পিছনে উদ্ধার হওয়া ডিজিটাল রেশন কার্ডগুলি পুরনো না নতুন, সেটা বড় কথা নয়। সাধারণ মানুষের রেশন কার্ড কীভাবে জঙ্গলে গেল সেটাই মুখ্য। কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়টি খাদ্যদপ্তরকে জানানো হয়েছে। তারাই তদন্ত করে দেখুক। তদন্তে কারোর গাফিলতি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপুর পঞ্চায়েত কার্যালয়ের পিছনের জঙ্গলের মধ্যে একগুচ্ছ রেশন কার্ড পড়েছিল। বুধবার সকালে স্থানীয় এক বাসিন্দা সেটি দেখতে পান। তিনি বিষয়টি জানাতেই এক সিভিক ভলান্টিয়ার সেগুলি কুড়িয়ে খাতড়া থানায় জমা দেন। থানা থেকে ব্লক প্রশাসনকে খবর দেওয়া হয়। তারপর কার্ডগুলি সুপুরের বিডিও-র কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে জঙ্গলমহল এলাকায় ডিজিটাল রেশনকার্ড বিলির কাজ শুরু হয়েছে। এখনও সব ব্লকে কার্ড বিলি সম্পূর্ণ হয়নি। তারই মধ্যে ডিজিটাল রেশনকার্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
প্রশাসন সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া ডিজিটাল কার্ডের মধ্যে কেন্দ্রীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনার পিএইচএইচ ও এসপিএইচএইচ কার্ড রয়েছে। রাজ্য সরকারের খাদ্যসাথী প্রকল্পের আরকেএসওয়াই-১ এর কার্ড রয়েছে। সব মিলিয়ে শ’খানেক ডিজিটাল রেশন কার্ড উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.