নন্দন দত্ত, সিউড়ি: কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি(SSC Scam) মামলায় ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল হয়েছে। প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রমীভাবে বহাল রয়েছে বীরভূমের শিক্ষিকা সোমা দাসের চাকরি। তিনি নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের মধুরা হাই স্কুলের বাংলার শিক্ষিকা। কিন্তু কোন যুক্তিতে সোমা দাসকে চাকরিতে বহাল রাখল উচ্চ আদালত? সোমবার এসএসসি মামলার ২৮১ পাতার রায়ে বিচারপতিরা জানাচ্ছেন, সোমা দাস ক্যানসার আক্রান্ত, তাই মানবিকতার স্বার্থে তাঁর চাকরি বাতিল করা হয়নি। তিনি আগের মতোই শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করবেন। এমন সুখবরে আনন্দিত হওয়ারই কথা। সোমাও খুশি। কিন্তু সহযোদ্ধাদের কথা ভেবে চিন্তিত। বলছেন, ”যোগ্য প্রার্থীদের পাশে আছি। তাঁরা যেন চাকরি পান।”
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলাকালীন হাই কোর্টের নির্দেশে বছর খানেক আগে চাকরিতে যোগদানের সুপারিশপত্র পেয়েছিলেন বীরভূমের (Birbhum) সোমা দাস। কলকাতা হাই কোর্টের আবেদনকে মান্যতা দিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) তরফে ব্লাড ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাসকে চাকরির সুপারিশপত্র দেওয়া হয়। তার পর তিনি বীরভূমের নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের মধুরা হাই স্কুলে বাংলার শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দেন। তবে সোমার এই চাকরি পাওয়ার রাস্তাও খুব মসৃণ ছিল না। ২০১৯ সালে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে যে চাকরিপ্রার্থীরা বেশ কয়েকমাস অনশন-আন্দোলন চালিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা সোমা দাস। এসএসসি আন্দোলনের মাঝেই চলেছিল তাঁর ক্যানসারের চিকিৎসা।
পরবর্তীতে চাকরি পেলেও সেদিনের আন্দোলনের কথা ভোলেননি সোমা। সোমবার তাই হাই কোর্টের (Calcutta HC) রায়ে নিজের চাকরি বহাল থাকলেও সহযোদ্ধাদের প্রতি তাঁর সমর্থনের হাত আজও বাড়িয়ে রেখেছেন বাংলার শিক্ষিকা। এদিনের রায়ের পর ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’কে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সোমা বলছেন, ”দুর্নীতি যে হয়েছিল, তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। মাননীয় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ই প্রথম তা চিহ্নিত করেন। তিনি যা বলেছিলেন, সেটাই আজকের রায়ে দুই বিচারপতি জানালেন। কিন্তু অনেক যোগ্য প্রার্থীই আজও চাকরি পাননি। তাঁদের জন্য খারাপ লাগছে। আমি তাঁদের পাশে আছি। আমি চাই, যাঁরা উপযুক্ত, তাঁরা যেন যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরিটা পান।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.