স্টাফ রিপোর্টার, বারুইপুর: রংমিস্ত্রি থেকে শিল্পপতি। তাঁর উত্থান হার মানাবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সুপারসনিক জেটকেও। এহেন প্রসন্ন রায়ের (Prasanna Roy) উল্কার গতিতে উত্থানের সাক্ষী তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী নীলিমা মঙ্গল। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে (SSC scam) প্রসন্নর গ্রেপ্তারির পর থেকেই বিভিন্ন সূত্র মারফত এমনটাই জানা যাচ্ছে। জানা গিয়েছে, হাওড়ার গাদিয়াড়ার পাশাপাশি সুন্দরবনেও প্রায় ৫০ কোটি টাকার দু’টি হোটেলের মালিক প্রসন্ন। দ্বিতীয় বিয়ের পর স্ত্রী নীলিমাকে বিলাসবহুল হোটেল দুটি উপহার দিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, সুন্দরবনে পর্যটন ব্যবসা পোক্ত করার জন্য তিনটি বিলাসবহুল জলযানও কিনেছিলেন তিনি। এইসব তথ্যই পৌঁছেছে সিবিআই ও ইডির কাছে।
জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের দয়াপুরে প্রায় ১৬ বিঘা জমির উপর অবস্থিত হোটেল দু’টি। একটি হল, সুরঞ্জনা। অন্যটির নাম রয়্যাল বেঙ্গল। হোটেল দু’টিতে প্রায় তিন শতাধিক ঘর আছে। প্রায় প্রতিটি ঘরই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ২০১৭ সালে যখন নোটবন্দি হয় তখন নগদ টাকায় হোটেল দু’টি কেনা হয়েছিল। একটি হোটেল ছিল নীলিমা মঙ্গলের নামে। অন্য হোটেলটি শ্রীদুর্গা ডেলকমের নামে। প্রসন্ন রায় তঁার দ্বিতীয় স্ত্রীর নামে কোম্পানি করেই হোটেলটি কিনেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। পঞ্চায়েত থেকে এই দু’টি নামেই দু’টি হোটেলের ট্রেড লাইসেন্স কাটা হত বলে খবর। সুন্দরবনের বিলাসবহুল হোটেলগুলির অন্যতম এই দু’টি। ইতিমধ্যেই হোটেল দু’টি ইডি ও সিবিআইয়ের রাডারে উঠে এসেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, মাঝেমধ্যেই দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে এখানে আসতেন প্রসন্ন। সঙ্গে থাকত একটি ছেলে ও মেয়ে। প্রথমে হোটেল দু’টি ছোট থাকলেও পরবর্তীতে প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করে হোটেল দু’টির সংস্কার করা হয়। অডিটোরিয়াম, সুইমিং পুল থেকে শুরু করে আধুনিক বিলাসবহুল জীবনযাত্রার সমস্ত বন্দোবস্ত রয়েছে সেখানে।
প্রথমে যে জলযানগুলি কেনা হয়েছিল তার নাম ছিল এম ভি পল্লবী, এম ভি সিন্দিকা ও এম ভি মিলি। পরে সেই নাম পরিবর্তন হয়। এম ভি পল্লবী হয়ে যায় এম ভি কাজল ও এম ভি সিন্দিকা হয়ে যায় এম ভি চন্দ্রিমা।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদ সদস্য অনিমেষ মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রথমদিকে প্রসন্নবাবু নিজের নামেই পঞ্চায়েতের ট্যাক্স কাটতেন। এখন পঞ্চায়েতের ট্রেড লাইসেন্স সবটাই অনলাইনে কাটা হয়। সেখানে নীলিমা মঙ্গল ও ও শ্রীদুর্গা ডেলকমের নামেই সমস্ত ট্রেড লাইসেন্স চলে। উনি আমাদের বলতেন ওঁর গাড়ির ব্যবসা আছে। কিন্তু উনি যে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, এলাকার কেউই তা জানতেন না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.